ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাগোষ্ঠীতে সংস্কৃতের স্থান নির্ধারণ করো। [২০১৬]

[উ]

ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাগোষ্ঠী—ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাগুলিকে প্রধানত দুটি শাখায় ভাগ করা হয়। এগুলি হল (১) কেতুম্ গুচ্ছ এবং (২) সতম্ গুচ্ছ। আবার ‘সতম্’ গুচ্ছের সবচেয়ে বড়ো উপশ্রেণিটি হল – ‘ইন্দো ইরানীয়’। এর দুটি ভাগ, যেমন–-ভারতীয় আর্য (প্রাচীন লিখিত নিদর্শন ‘ঋগ্‌বেদ’) এবং ইরানীয় আর্যভাষা (প্রাচীন লিখিত নিদর্শন ‘আবেস্তা’)।

            ‘সতম্’ শাখা ভাষী মানুষেরা মূল ভাষাগোষ্ঠী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নিজেদের আর্য বলে পরিচয় দিতেন। তাই এই ইন্দো-ইরানীয় শাখাকে ‘আর্য’ শাখাও বলা হয়।

সংস্কৃতের স্থান

ভারতীয় আর্যভাষার প্রচলন প্রধানত ভারতবর্ষে। এর তিনটি স্তর–  (১) প্রাচীন ভারতীয় আর্যভাষা, (২) মধ্য ভারতীয় আর্যভাষা, (৩) নব্য ভারতীয় আর্যভাষা।

প্রাচীন ভারতীয় আর্যভাষার স্তরে পড়ে বৈদিক সংস্কৃত। এর মধ্যে আছে—চার বেদ, ব্রাহ্মণ, আরণ্যক, উপনিষদ, সূত্রসাহিত্য। প্রাচীন ভারতীয় আর্যভাষার শেষ স্তর ধ্রুপদি সংস্কৃত ভাষা। এই স্তরে আছে ভারতবর্ষের দুই প্রধান মহাকাব্য রামায়ণ ও মহাভারত। এই স্তরে বিবর্তন ও পরিণতি দীর্ঘকাল ধরে চলেছে। মোটের উপর ষোড়শ শতাব্দী পর্যন্ত সংস্কৃতের সমৃদ্ধির যুগ। এই সময়ের সংস্কৃত সাহিত্যের উল্লেখযোগ্য রচনা হল অশ্বঘোষ, ভাস, কালিদাস, ভবভূতি, বিষুশর্মা প্রমুখের কাব্য, নাটক, গল্পসাহিত্য প্রভৃতি।

মূল্যায়ন—ভাষাতত্ত্বের ইতিহাসে সংস্কৃতের গুরুত্ব অনেক। কারণ বর্তমানে ভাষাবিজ্ঞানের গবেষণায় প্রধান অংশ জুড়ে রয়েছে ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা। তার সঙ্গে সংস্কৃতের সম্পর্ক অসীম।

error: সর্বস্বত্ত্ব সংরক্ষিত