“ন কর্মণামনারম্ভান্নৈষ্কর্ম্যং পুরুষোহশ্নুতে।” 

(উত্তর) সাধারণ লোকে বিহিত কর্মের অনুষ্ঠান না-করে নৈষ্কর্ম্য মোক্ষ লাভ করতে পারে না। ‘নৈষ্কর্ম্য’ শব্দের সাধারণ অর্থ হল ‘কর্মশূন্যতা’। যখন মানুষ কোনো কর্ম করে না তখন তাকে বলে নিষ্কর্মা, আর নিষ্কর্মার ভাব হল ‘নৈষ্কর্ম্য’। কিন্তু এর একটা বিশেষ অর্থ আছে। 

কর্মমাত্রই বন্ধনের কারণ। এই কর্মবন্ধন থেকে মুক্তি পাওয়াকে বলে ‘নৈষ্কর্ম্যসিদ্ধি’ বা মোক্ষ। মোক্ষলাভ করলে মানুষ জন্মমৃত্যুচক্রে আবদ্ধ হয় না, পরমাত্মার সঙ্গে মিশে যায়। সন্ন্যাস-মার্গীদের মতে কর্ম ত্যাগ করে জ্ঞানমার্গে বিচরণ করলে ‘নৈষ্কর্ম্য’ বা মোক্ষলাভ ঘটবে। গীতায় এই মতকে সমর্থন করা হয় না। সেখানে নৈষ্কর্ম্য বলতে কর্মত্যাগ বোঝাচ্ছে না। যতক্ষণ পর্যন্ত স্বার্থের জন্য কর্ম করা হয়, ততক্ষণ কামনা ত্যাগ হয় না এবং যতদিন কামনা শূন্যতা না হয়, ততদিন নৈষ্কর্ম্য প্রাপ্তি বা মোক্ষলাভ ঘটে না। নিষ্কামভাবে কর্ম করলেই কর্মযোগে সিদ্ধিলাভ সম্ভব। অতএব কর্মযোগে কর্ম করা অত্যন্ত প্রয়োজন।

error: সর্বস্বত্ত্ব সংরক্ষিত