‘হে ভারতের শ্রমজীবি!’—শ্রমজীবী সম্পর্কে স্বামী বিবেকানন্দের ধারণা ‘সুয়েজখালে : হাঙ্গর শিকার’ রচনা অবলম্বনে লেখো।

সূচনা : স্বামী বিবেকানন্দের লেখা ‘পরিব্রাজক’ গ্রন্থের অন্তর্গত একটি অসাধারণ গদ্য হলো ‘সুয়েজখালে : হাঙ্গর শিকার’। আলোচ্য নিবন্ধে লেখক ভারতের শ্রমজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তাদের কৃতিত্বের কথা কৃতজ্ঞতা চিত্তের স্মরণ করেছেন।

শ্রমজীবী সম্পর্কে স্বামীজী

স্বামীজী দেখেছেন শ্রমজীবী মানুষ প্রতিনিয়ত কাজ করে চলে। কিন্তু তাদের কথা কেউ ভাবে না। এই প্রবন্ধের দশম অনুচ্ছেদে এসে স্বামীজী লিখেছেন—

“হে ভারতের শ্রমজীবি।…ভারতের চিরপদদলিত শ্রমজীবি ! — তোমাদের প্রণাম করি।”

তাঁর এই প্রণতি জ্ঞাপনের কারণ—তিনি জানেন অবহেলিত অপমানিত শ্রমজীবীরাই এই ভারতবর্ষের মূল শক্তি। এরা চাষ করে। এরা তাঁত বোনে। এরা নদীতে জাল ফেলে। এদের স্বজাতি কখনও মর্যাদা দেয়নি। এরা ব্রাত্য। এরা মন্ত্রহীন।

স্বামীজী দেখেছেন—যারা চিরকাল নীরবে কাজ করে চলেছে, তাদের মর্যাদা দেওয়া হয়নি। স্বামীজীর মনে হয়েছে আমাদের পূর্বপুরুষরা তত্ত্বকথা লিখেছেন, কাব্যকথা লিখেছেন; কিন্তু এদের দুর্দশার কথা লেখেননি। এদের কথা স্বামীজী অন্যত্র উল্লেখ করেছেন—

“বল—মূর্খ ভারতবাসী, দরিদ্র ভারতবাসী, ব্রাহ্মণ ভারতবাসী, চণ্ডাল ভারতবাসী আমার ভাই।”

সুতরাং শ্রমজীবী মানুষকে তিনি অন্তর থেকে বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছেন। এদের সম্পর্কে স্বামীজীর গভীর বিশ্বাস ছিল। এদেরকে তিনি ভাই ও আত্মীয় বলেছেন।

error: সর্বস্বত্ত্ব সংরক্ষিত