‘একথা ইওরোপীয়েরা স্বীকার করতে চায় না’—কোন কথা ইউরোপীয়েরা স্বীকার করতে চায় না? কেন চায় না ?

সূচনা : স্বামী বিবেকানন্দের লেখা ‘পরিব্রাজক’ গ্রন্থের অন্তর্গত একটি অসাধারণ গদ্য হলো ‘সুয়েজখালে : হাঙ্গর শিকার’। আলোচ্য নিবন্ধে লেখক ভারতের প্রাচীন বাণিজ্য সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ কথা জানিয়েছেন।

কোন কথা : স্বামীজী জানিয়েছেন, ভারতবর্ষ পৃথিবীর অন্যান্য সমৃদ্ধিশালী দেশগুলির আয়ের উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু সাম্রাজ্যবাদী ইউরোপের দেশগুলি সেকথা স্বীকার করেনি। সেই প্রসঙ্গে এই উক্তি।

স্বীকার না করার কারণ : ইউরোপীয় দেশগুলি ভারতবর্ষের কৃতিত্বকে মেনে নেয়নি। স্বামীজী জানান—ব্যাবিলন, ইরান, গ্রিস, রোম ইত্যাদি দেশের বাণিজ্য একসময় ভারতের উপর নির্ভর করেই সম্পন্ন হতো।

তখন ভারতবর্ষে আসার জলপথ আবিষ্কারে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন নানাজাতির মানুষ। পোর্তুগিজরা ভারতে আসার নতুন পথ আবিষ্কার করেছিলেন। তাঁদের অনুসরণ করেছিলেন ফরাসী, ওলন্দাজ, দিনেমার এবং অবশেষে ইংরেজ। এই প্রসঙ্গে লেখক বলেছেন—

এক–‘ভারতের লক্ষ্মী পোর্তুগালের উপর সদয়া হলেন’।

দুই—‘ইংরেজের ঘরে ভারতের বাণিজ্য, রাজস্ব-সমস্তই’।

সুতরাং স্বামীজী বলতে চেয়েছেন, ভারতের উপর নির্ভর করেই আজ ইংরেজ ‘সকলের উপর বড় জাত’। এখন আমেরিকার মতো দেশে ভারতের জিনিসপত্র অনেক স্থানে উৎপন্ন হওয়ায় ‘ভারতের আর কদর নাই’।

একসময়ে ভারতে উৎপন্ন সুতির কাপড়, তুলো, পাট, নীল, লাক্ষা, চাল, হীরে, মতি ইত্যাদি বিদেশে রপ্তানি হতো। ভারতের মতো নেটিভ দেশের কাছে ইউরোপ কখনও সেদিনের সেই ঋণের কথা স্বীকার করেনি।

error: সর্বস্বত্ত্ব সংরক্ষিত