(উত্তর) প্রথম অংশ—সাধক কবি লালন ফকির ‘বাড়ির কাছে আরশিনগর’ নামাঙ্কিত গানে যে আরশিনগরের কথা বলেছেন তা কোনো পরিচিত বা প্রচলিত নগর নয়। আরশিনগর হলো—সাধকের মনোভূমি।
দ্বিতীয় অংশ—লালনের ধর্মমত অতি সরল ও উদার। পড়শি শব্দটি আপাত বিচারে প্রতিবেশিকে নির্দেশ করছে। কিন্তু গভীর অর্থে পড়শি বলতে কবি ‘মনের মানুষ’, ‘কাছে মানুষ’, ‘সাঁই’ ইত্যাদি অর্থের দিকে আলোকপাত করেছেন।
তৃতীয় অংশ—সাধক লালন তাঁর বিভিন্ন গানে মনের মানুষের সন্ধান করেছেন। সেই মনের মানুষ বা পড়শি তাঁর কাছেই থাকেন। অথচ তাঁর অজ্ঞতার কারণে তাঁকে চিনতে পারেন না। তাই লালন বলেছেন, “আমি একদিনও না দেখিলাম তারে”।
লালন ও পড়শির মধ্যে রয়েছে ‘অগাধ পানি’র দূরত্ব। তাই তাঁকে কাছে পান না। পড়শি যেখানে থাকেন সেখানে যাওয়াও সম্ভব হয় না। সাধক ইচ্ছা করলেই তাঁর সাধনার ধনকে কাছে পান না। সেজন্য লালন আক্ষেপ করে বলেছেন—“আমি কেমনে সে গাঁয় যাই রে”।
প্রকৃতপক্ষে লালন মনে করেন, পড়শি আমাদের মনের মধ্যেই অবস্থান করেন। আমরা তাঁকে উপলব্ধি করতে পারি না বলেই তাঁর আর সাধকের মাঝে ‘লক্ষ যোজন ফাঁক’। এভাবে লালন ও পড়শির মধ্যে এক অদ্ভুত গভীর সম্পর্ক রচিত হয়েছে।