‘ভুলিব এ জ্বালা, এ বিষম জ্বালা, দেব, ভুলিব সত্বরে।’ – কে, কাকে উদ্দেশ্য করে এ কথা বলেছেন? এখানে কোন জ্বালার কথা বলা হয়েছে? তিনি কীভাবে সেই বিষম জ্বালা ভুলতে চেয়েছেন?

[উ] ১) কে, কাকে–‘বীরাঙ্গনা’ কাব্যের ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’ কবিতায় কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত মাহেশ্বরী পুরীর রাজমহিষীর মনের অন্তর্বেদনার পরিচয় দিয়েছেন। জনা নীলধ্বজকে উদ্দেশ্য করে উক্তিটি করেছেন।

২) কোন্ জ্বালা—জনা তার একমাত্র পুত্র প্রবীরের মৃত্যুর জন্যে কষ্ট পেয়েছেন। এখানে জনার বিলাপে সেই জ্বালার কথা উচ্চারিত হয়েছে।

৩) বিষম জ্বালা ভোলার উপায়—অন্যায় সমরে প্রবীরকে হত্যা করেছিলেন তৃতীয় পাণ্ডব অর্জুন। মাহেশ্বরী পুরীর যুবরাজ প্রবীর অশ্বমেধের যজ্ঞাশ্ব ধরেছিলেন। সেই অপরাধে পার্থ তাকে হত্যা করেছিলেন। পুত্রশোকে একান্ত অস্থিরা জনা নীলধ্বজকে জানিয়েছিলেন—

“টুট কিরীটির গর্ব আজি রণস্থলে!

খণ্ডমুণ্ড তার আন শূল-দণ্ড-শিরে!

অন্যায় সমরে মূঢ় নাশিল বালকে;

নাশ, মহেষ্বাস, তারে!”

বীরপুত্র প্রবীর মহাবিক্রমে ক্ষাত্রধর্ম পালন করে রণাঙ্গণে প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন। তার জন্যে গর্ব করা উচিত বলে জনা মনে করেন। একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, অন্যায় সমরে যে মূঢ় প্রবীরকে হত্যা করেছেন, তাকে যেন তাঁর স্বামী যোগ্য শাস্তি দেন। অর্জুনের শাস্তি প্রাপ্তির মধ্যে দিয়েই জনা তাঁর পুত্র হারানোর যন্ত্রণা ভুলতে চান।

error: সর্বস্বত্ত্ব সংরক্ষিত