‘কিন্তু বৃথা এ গঞ্জনা’ – বক্তার এই আক্ষেপ কেন? এ বিষয়ে তার প্রতিক্রিয়া কী ছিল?

[উ] আক্ষেপের কারণ—অংশটি মধুসূদন দত্ত প্রণীত ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’ (‘বীরাঙ্গনা’) পত্র কবিতা থেকে গৃহীত হয়েছে।

রাজমাতা জনা বিশ্বাস করতেন, তার স্বামী নীলধ্বজ নিঃসন্দেহে পুত্রহত্যার প্রতিশোধ নেবেন। কিন্তু তার সেই বিশ্বাস তাসের ঘরের ভেঙে যায়। সেইজন্য জনা আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন।

    জনা দেখেছেন—

১) স্বামী নীলধ্বজ পার্থের বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রায় প্রস্তুতি নেননি।

২) স্বামী পুত্র-হন্তার সঙ্গে মিত্রতার সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন।

৩) অর্জুনের জন্যই রাজপুরী সজ্জিত হয়েছে, নাচ-গানের আয়োজন করা হয়েছে। রাজমাতা জনা স্বামীকে জানাচ্ছেন, তিনি যেন ক্ষত্রিয় ধর্ম পালন করেন। অর্জুনকে চণ্ডালের সঙ্গে তুলনা করে জানান—“চণ্ডালের পদধূলি ব্রাহ্মণের ভালে”।

এইসব সত্ত্বেও জনা স্বামীকে নিন্দা করতে পারেননি। কেননা স্বামী তার কাছে গুরুজন। তাই তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন। এবং ব্যর্থ হয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন।

বক্তার প্রতিক্রিয়া—বক্তা জনা কখনোই নিজে পার্থের বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রা করতে পারেন না। তাই তার মর্মপীড়া মৃত্যুর মধ্যেই সমাপ্ত হওয়ার কথা জানিয়েছেন—

“ছাড়িব এ পোড়া প্রাণ জাহ্নবীর জলে”।

error: সর্বস্বত্ত্ব সংরক্ষিত