‘মা তখনো মেঝেতে পড়ে ডুকরে কাঁদছে’ – প্রসঙ্গ উল্লেখ করে কাঁদার কারণ উল্লেখ করো।

কথামুখ: ঔপন্যাসিক সতিনাথ ভাদুড়ীর অন্যতম একটি গল্প হলো ‘ডাকাতের মা’। এই গল্পে সৌখীর মায়ের সামান্য ভুল সিদ্ধান্তে আনন্দ কিভাবে দুঃখে পরিণত হয় তার পরিচয় রয়েছে।

প্রসঙ্গ: সৌখীর মা মাতাদিন পেশকারের বাড়ি থেকে লোটা চুরি করেছিল। অথচ সেই চুরির দায় পড়েছিল সৌখীর উপর। সোউখীকে দারোগা সাহেব ধরে নিয়ে যাবার সময় তার মায়ের অবস্থা প্রসঙ্গে এই উক্তিটি করা হয়েছে।

কাঁদার কারণ: দীর্ঘদিন পর সৌখী বাড়ি ফিরেছে। ছেলেকে কী খাওয়াবে এই চিন্তায় সৌখির মা সারারাত চোখের দুটি পাতা এক করতে পারেনি। ছেলের পছন্দের খাবার ছিল ‘আলু চচ্চড়ি’, সে প্রসঙ্গে সোউখীর মায়ের ভাবনা এইরকম:

“আলু, চাল, সরষের তেল সবই কিনতে হবে। অত পয়সা পাব কোথায়?”

–এই চিন্তায় সৌখীর মা মাতাদীন পেশকারের বাড়ি থেকে একটি লোটা চুরি করে।

          মাতাদিন পেশকারের সঙ্গে দারোগা পুলিশের গভীর সখ্যতার সম্পর্ক। এই কারণে খুব তাড়াতাড়িই সৌখীর বাড়িতে পুলিশ হাজির হয়। দারোগা সাহেবের প্রশ্নের জবাবে সৌখীর মা একটি কথাও বলতে পারে না। শেষ পর্যন্ত সৌখী যখন মায়ের চুরির অপবাদ নিজের মাথায় নিল, তখন সৌখীর মা ডুকরে কেঁদে উঠেছিল। দীর্ঘদিনের গর্ব এক মুহূর্তে যেন খান খান হয়ে যায়, যখন লোটা চুরির কলঙ্ক সৌখীর কাঁধে চাপে। যে ছিঁচকে চোরদের সৌখীর মায়ের পছন্দ হয়না, সেই ছিঁচকে চুরির অপবাদেই সৌখীর জেল হবে জেনে মায়ের সমস্ত অহংকার ধূলিস্যাৎ হয়। এই কারণেই দর্পচূর্ণের অবসানে সৌখীর মা কান্নায় ভেঙে পড়ে।

error: সর্বস্বত্ত্ব সংরক্ষিত