মহাপঞ্চকের সঙ্গে আচার্য অদীন পুণ্যের বিরোধ বাধল কেন? কে কোথায় অদীন পুণ্যের নির্বাসন দিলেন?

[উ] ৫.১) মহাপঞ্চকের সঙ্গে আচার্য অদীন পুণ্যের বিরোধের কারণ

‘গুরু’ নাটকের মধ্যে রবীন্দ্রনাথ সরাসরি দুটি পক্ষ এনেছেন। একদিকে রয়েছে আচার সর্বস্বতা, অন্যদিকে তার বিরোধিতা। এখানে আমরা দেখেছি মহাপঞ্চক, উপাচার্য, উপাধ্যায় যে আচারকে পালন করতে বাধ্য করান তার বিধানদাতা হলেন আচার্য।

        অচলায়তনের এই আচার্য হলেন অদীনপুণ্য। রক্ষণশীল প্রতিষ্ঠানের মাথার উপরে থাকা আচার্য এক সময় বুঝতে পারেন আশ্রমের বালকেরা শুধুমাত্র সংস্কার লালন করেছে; প্রকৃত শিক্ষা তারা গ্রহণ করেনি।

        অচলায়তনের সর্বকনিষ্ঠ শিক্ষার্থী সুভদ্র উত্তর দিকের জানালা খুলে মহাপাপ করেছে। তার একমাত্র খণ্ডন ‘মহাতামস ব্রত’ সাধন। মহাপঞ্চক আধি কর্মিক বর্ষায়ণ থেকে খুঁজে পেয়েছেন প্রায়শ্চিত্ত বিধির কথা।

        এই বিধি অনুযায়ী সুভদ্রকে অন্ধকার ঘরে ছ-মাস থাকতে হবে। আচার্যের অভিমত হলো, সুভদ্রকে কোনো প্রায়শ্চিত্ত করার দরকার নেই এবং তার আশীর্বাদেরই সুভদ্রের পাপ খণ্ডন হবে। একথা শুনে এবং আচার্যের ব্যবহারের পরিবর্তন দেখে উপাধ্যায়, মহাপঞ্চক, উপাচার্য সকলেই বিস্মিত হন, অসন্তুষ্ট হন। রুষ্ট মহাপঞ্চক জানায়, তাঁর বুদ্ধিবিকার হয়েছে। তাকে আচার্য্য বলে গণ্য করাও চলে না।

৫.২) নির্বাসন স্থান

সুভদ্রকে মহাপঞ্চকের হাত থেকে উদ্ধার করে পঞ্চক ও আচার্য চলে যান। তার পরেই আসেন স্থবিরপত্তনের রাজা মন্থরগুপ্ত। মহাপঞ্চক অচলায়তনের সর্বনাশ প্রসঙ্গে জানায়, “আচার্য অদীনপুণ্য এ পাপের প্রায়শ্চিত্ত করতে দিচ্ছেন না”। এবং পরিশেষে রাজা মন্থরগুপ্ত আচার্যকে নির্বাসন দেন দর্ভকপাড়ায়। আয়তনের আচার্য করেন মহাপঞ্চককে।

error: সর্বস্বত্ত্ব সংরক্ষিত