‘গুরু’ নাটকে মোট কটি সংগীত রয়েছে? নাটকটিতে সংগীতের ভূমিকা আলোচনা করো।

[উ ] ১.১) মোট সংগীত : একটানা কাহিনির মধ্যে সংগীত আনা হয় দর্শকের মন তৃপ্তি করার জন্য। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘গুরু’ নাটকে সাতটি সংগীত বিন্যাস্ত করা হয়েছে। যদিও ‘অচলায়তন’ নাটকে গানের সংখ্যা ছিল তেইশ।

১.২) নাটকে সংগীতের ভূমিকা : গুরু নাটকে পঞ্চকের কন্ঠে গীত হয়েছে পাঁচটি গান। নাটকের শুরুতে পঞ্চক গেয়েছে, ‘তুমি ডাক দিয়েছ কোন সকালে কেউ তা জানে না।’ এই গানটি গুরু নাটকে চারবারে ভেঙে ভেঙে ব্যবহার করা হয়েছে। পঞ্চকের দ্বিতীয় গান ‘ওরে ওরে ওরে আমার মন মেতেছে’। এই গানে পঞ্চক জানিয়েছে, তার মন মুক্তির আনন্দে আপ্লুত হয়েছে। পরে পঞ্চকের কণ্ঠে গীত হয়েছে এই গানটি— ‘ওরে ভাই নাচ রে ও ভাই নাচ রে’। ‘গুরু’ নাটকের দ্বিতীয় দৃশ্যে পঞ্চক গেয়েছে ‘এ পথ গেছে কোন্‌খানে গো কোন্‌খানে’। পঞ্চক তার পথের সন্ধান করেছে নিসর্গ প্রকৃতির মধ্যে।

        যূনকদের দুটি গান রয়েছে ‘গুরু’ নাটকে। এই গানদুটি হলো—ক) আমরা চাষ করি আনন্দে। খ) সব কাজে হাত লাগাই মোরা। এই দুটি গানে কর্মমুখর জনতার কথা আছে। রবীন্দ্রনাথ ‘ওরা কাজ করে’ কবিতায় যাদের ‘ওরা’ বলে চিহ্নিত করেছেন, তারাই হলো যূনক।

দর্ভকরা সমবেতভাবে গেয়েছে ‘ও অকুলের কুল ও অগতির গতি’। এই গানের মধ্যে রয়েছে অকৃত্রিম অনুরাগ ও ভক্তি।

        নাটকের শেষে গুরুকে প্রদক্ষিণ করে যূনক ও দর্ভক সবাই মিলে গেয়েছে—

ভেঙেছে দুয়ার,  এসেছ জ্যোতির্ময়

        তোমারি হউক জয়।

তিমির-বিদার   উদার অভ্যুদয়

তোমারি হউক জয়।

এই গানে বন্ধন মুক্তির কথা বলা হয়েছে। এককথায় ঘটনা, চরিত্র, নাট্যব্যঞ্জনায় ‘গুরু’ নাটকের প্রতিটি গান হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ।

error: সর্বস্বত্ত্ব সংরক্ষিত