[উ]
ভাষার কিছু ধ্বনি উপাদান থাকে যেগুলিকে কৃত্রিমভাবেও খণ্ড করা যায় না। কারণ সেগুলি কোনো বিভাজ্য ধ্বনির অংশ নয়, সেগুলি একাধিক ধ্বনিখণ্ড জুড়ে অবস্থান করে। এগুলিকে বলে অবিভাজ্যধ্বনি।
কয়েকটি অবিভাজ্য ধ্বনি হলো—শ্বাসাঘাত, সুরতরঙ্গ, যতি প্রভৃতি।
অবিভাজ্যধ্বনির পরিচয়
শ্বাসাঘাত : সাধারণত একাধিক দলযুক্ত, বাংলা শব্দের প্রথম দলে বেশি জোর দিয়ে উচ্চারণ করাকে শ্বাসাঘাত বলে। শ্বাসাঘাত কোনো নির্দিষ্ট ধ্বনিতে শ্বাসাঘাত নয়, সম্পূর্ণ দল জুড়ে উপস্থিত থাকে বলে এটি অবিভাজ্যধ্বনি।
যেমন – ‘ছিপখান তিনদাঁড় তিনজন মাল্লা(মাল্লা)’–উদাহরণটির প্রত্যেক ক্ষেত্রে প্রথম দলে শ্বাসাঘাত লক্ষ করা যাচ্ছে।
সুরতরঙ্গ : বাক্যে সুরের ওঠা-নামাকে সুরতরঙ্গ বলে। সুরতরঙ্গ শুনে শ্রোতা বাক্যের অর্থ বা ভাব উপলব্ধি করতে পারে। যেমন—
বিবৃতিবাক্য – তুমি যাবে।
প্রশ্নবাক্য – তুমি যাবে?
–এখানে বিবৃতিমূলক বাক্যে ‘সুর’ ক্রমশ নেমেছে। অন্যদিকে প্রশ্নবোধক বাক্যের ক্ষেত্রে সুরতরঙ্গের বৃদ্ধি ঘটেছে।
দৈর্ঘ্য : দলের উচ্চারণে স্বরধ্বনির বিস্তৃতি দৈর্ঘ্য নামে পরিচিত। বাংলায় একদল শব্দের স্বরধ্বনির দৈর্ঘ্য বহুদল শব্দের স্বরধ্বনি অপেক্ষা বেশি।
যেমন–আমার, তোমার শব্দে ‘আ’ এবং ‘তো’ দলগুলির দৈর্ঘ্য ‘মার’ দলগুলি অপেক্ষা বেশি।
যতি : দল বা শব্দসীমার অপেক্ষাকৃত দীর্ঘচ্ছেদকে যতি বলে। যেমন তোমার নাম | জানতে চাই। এই বাক্যে ‘|’ হল যতিচিহ্ন।