(উত্তর)
সূচনা : কবি বের্টোল্ট ব্রেখ্ট্-এর ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ (শঙ্খ ঘোষ অনূদিত গ্রন্থ ‘বহুল দেবতা বহু স্বর’) কবিতায় কবি শ্রমজীবী মানুষের প্রতিনিধি একজন পড়তে জানা মজুরের সমাজের প্রতি করা প্রশ্নগুলিকে তুলে ধরেছেন।
প্রসঙ্গ : দরিদ্র, লাঞ্ছিত, শ্রমজীবী মানুষগুলি ইতিহাসখ্যাত থিবস্ নগরী নির্মাণের উদ্দেশ্যে পাথর ঘাড়ে করে এনেছিল। কায়িক শ্রমের মাধমে সমৃদ্ধশালী থিবস্ গড়ে তুলেছিল। প্রাচীন মিশরের সাতদরজাওয়ালা থিবস্-এর নেপথ্যে থাকা শ্রমিক শ্রেণির অক্লান্ত পরিশ্রম উপেক্ষিত থেকে গেছে। যুগে যুগে এভাবেই সৃষ্টির অন্তরালে থেকে যায় মূল স্রষ্টারা, আর সামনে আসে রাজা মহারাজাদের নাম। এই সমস্ত মজুর শ্রেণির কথা প্রসঙ্গে আলোচ্য কবিতায় কবি ইঙ্গিতপূর্ণ প্রসঙ্গের অবতারণা করেছেন।
কারণ : মার্কসীয় সাহিত্যিক ব্রেখট্ তাঁর আলোচ্য কবিতাটিতে প্রকৃত অর্থে পুঁজিবাদী শোষণের বিরুদ্ধে বক্তব্য পেশ করেছেন। সভ্যতার নির্মাণে যারা চিরকাল শ্রম দিয়েছেন, সেইসব মানুষদের নিঃস্বার্থ আত্মবলিদানে তৈরি হয় ইতিহাস। অথচ অর্ধসত্য ইতিহাসে খোদাই হয়ে যায় তৎকালীন রাজার নাম। রাষ্ট্রনায়কদের গুণগান রচিত হয় সাহিত্যে, ইতিহাসে, প্রামাণ্য দলিলে কিন্তু যারা প্রকৃত কারিগর তাদের খবর পাওয়া যায় না। নাম না জানা অসংখ্য এই মজুররাই পাথর বয়ে আনে, তিলে তিলে সৃষ্টি করে সভ্যতার ভিত।