(উত্তর)
প্রথম অংশ : সাম্যবাদী চেতনায় বিশ্বাসী কবি বের্টোল্ট ব্রেখট্ তাঁর ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ (শঙ্খ ঘোষ অনূদিত গ্রন্থ ‘বহুল দেবতা বহু স্বর’) কবিতায় বলেছেন রাজা বা মহারাজারা যখন যুদ্ধ জয় করেন, স্বাভাবিকভাবেই তখন তিনি অনেক সৈনিকদের সাহায্য নেন। কিন্তু ইতিহাসের পাতায় পাতায় কেবল রাজা মহারাজাদের জয় লেখা থাকে।
দ্বিতীয় অংশ : প্রতাপশালী দিগ্বিজয়ী রাজারা যুদ্ধজয় করে উৎসব উদযাপন করতেন। বিজয়-উৎসবের আনন্দে আয়োজন করা হত বিপুল ভোজের। সেই ভোজ যারা বানাত তারা শ্রমিক, মেহনতি মানুষ। তাদের কথা ইতিহাসে লেখা থাকে না, শুধু রাজা বা শাসকদের কীর্তির কথা লেখা থাকে । ভোগবিলাসে মত্ত সম্রাটরা প্রজাদের থেকে রাজস্ব আদায় করে তা দিয়ে নিজেদের বিলাস-বাসনা চরিতার্থ করতেন।
প্রজারা প্রতিটি যুদ্ধের সাফল্যের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কারিগর। শ্রমিকের রক্তে-ঘামে-শ্রমে সমৃদ্ধ হয়ে সম্রাটরা বিজয়োৎসব পালন করতেন। অথচ সভ্যতার অগ্রগতির নেপথ্য কারিগররা দারিদ্র্য-বঞ্চনা-অসম্মানের অন্ধকারে পড়ে থাকত। জয়োৎসবের ভোজ প্রস্তুতকারী পাচক বা রাঁধুনিরাও শ্রমিক। উৎসবের ভোজসভায় তারা যেন নিজেরাই ভোজ্য। পড়তে জানা এক মজুরের প্রশ্নমালার মাধ্যমে কবি ইতিহাসবেত্তা ও সভ্যসমাজের কাছে প্রতিবাদ পৌঁছে দিতে চেয়েছেন এবং জগতের সমস্ত শ্রমজীবী মানুষের সহমর্মী হয়ে উঠেছেন।