[মান – ৫] “… সেই সন্ধ্যায় কোথায় গেল রাজমিস্ত্রিরা ?”- রাজমিস্ত্রিরা কী নির্মাণ করেছিল? এই প্রশ্নের মাধ্যমে বক্তা কী বলতে চেয়েছেন ?

(উত্তর)

যা নির্মাণ করেছিল : জার্মান কবি বের্টোল্ট ব্রেশ্ট-এর ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ কবিতায় উল্লিখিত রাজমিস্ত্রিরা পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্যের একটি নজির ‘চিনের প্রাচীর’ গড়ে তোলে।

কবির বক্তব্য : চিনের সম্রাট কিন সি হুয়াং-এর আমলে খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম শতক থেকে চিনের প্রাচীর নির্মাণের কাজ শুরু হয়। এই সুউচ্চ, সুদীর্ঘ প্রাচীর খ্রিস্টীয় ষোড়শ শতক পর্যন্ত বেশ কিছু সম্রাটের আমল জুড়ে তৈরি হয়, যাদের নাম ইতিহাসে পাওয়া যায়। অথচ যে অসংখ্য রাজমিস্ত্রির অমানুষিক পরিশ্রমে নির্মিত এই অবিশ্বাস্য স্থাপত্য তারা আজও অপরিচিত।

সমাজসচেতন কবি জানেন, শ্রমজীবী শ্রেণি মানবসভ্যতার অগ্রগতি এবং সংস্কৃতির বিকাশে প্রত্যক্ষ ভূমিকা গ্রহণ করে। তবু তারা গতানুগতিক ইতিহাসের পাতায় চরম অবহেলিত। মানবসভ্যতার প্রকৃত ধারক ও বাহক হলেও ‘রাজমিস্ত্রিরা কর্মযজ্ঞ শেষ হলে বিস্মৃতির অতলে, নাগরিক সভ্যতার বঞ্চনার অন্ধকারে আত্মগোপন করে।

উদ্ধৃত উক্তিতে পড়তে জানা মজুর অধিকারহীন শ্রমিক শ্রেণির প্রতিনিধি হিসেবে নাগরিক সমাজকে প্রশ্ন করেছে। এই প্রশ্নের আড়ালে নিহিত রয়েছে সমাজের শ্রমজীবী শ্রেণির প্রতি উচ্চবিত্তের চিরকালীন বঞ্চনার ইতিহাস।

error: সর্বস্বত্ত্ব সংরক্ষিত