(উত্তর)
প্রথম অংশ : পঞ্চাশের মন্বন্তরের এক সকালে লেখক ফরিদপুর জেলার রাজবাড়ির বাজারে বসেছিলেন। কুয়াশামাখা সেই সকালে একটু দূরে স্টেশনের রাস্তায় মিলিটারি ছাউনির পাশে তিনি দেখতে পেয়েছিলেন এক ‘অদ্ভুত জন্তু’। জন্তুটি আস্তে আস্তে চার পায়ে এগিয়ে আসছিল।
ক। জন্তুটির চোখের বর্ণনা : কুয়াশার মধ্যেও জ্বলজ্বল করছিল সেই অদ্ভুত জন্তুর দুটি চোখ। তার চোখের দৃষ্টিতে ছিল বুকের রক্ত হিম করা এক মায়া।
খ। জন্তুটির অদ্ভুত আচরণ : রাস্তার ধুলো থেকে কী যেন খুঁটে খুঁটে খাচ্ছিল জন্তুটা। তার জ্বলন্ত চোখ কুয়াশার মধ্যে কী একটা খুঁজে ফিরছিল।
গ। জন্তুটির প্রকৃত পরিচয় : সামনে আসতেই বোঝা যায়, এটা কোন জন্তু নয় বরং একজন মানুষ। বারো-তেরো বছরের এক পঙ্গু কিশোর। মাজা পড়ে যাওয়ায়, চার হাতে পায়ে হেঁটে সে রাস্তা থেকে চাল আর ছোলা খুঁটে খুঁটে খাচ্ছে।
—এভাবে রাজবাড়ির বাজারে, স্টেশনের রাস্তায় জন্তুসদৃশ ছেলেটির জ্বলন্ত দুটি চোখ দেখেছিলেন লেখক।
দ্বিতীয় অংশ : লেখক এই কিশোরের অন্তর্ভেদী চোখের ভাষা পড়তে পেরেছিলেন। তিনি বুঝেছিলেন ছেলেটির জ্বলন্ত চোখ দুটি শান্তি চায়, সে দেখতে চায়—
- বাংলার বুক জুড়ে সবুজ মাঠে সোনালী ফসলের সমাহার আর চাষিদের গোলা ভরা ধনের প্রাচুর্য।
- কারখানায় কারখানায় বন্ধনমুক্ত মানুষের আন্দোলিত বাহুতে বাহু মেলানো শাস্তি।
- যুদ্ধ আর অনাহারে মৃত্যুর বদলে, কোটি কোটি বলিষ্ঠ হাতে স্বাধীন সুখী জীবনের শান্তি।