(উত্তর)
কাকে : সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের ‘আমার বাংলা’ গদ্যগ্রন্থের ‘হাত বাড়াও’ রচনা থেকে উদ্ধৃতিটি গৃহীত। আলোচ্য অংশে পঞ্চাশের আকালে বুভুক্ষু বারো- তেরো বছরের সম্পূর্ণ উলঙ্গ অনাহারী এক কিশোরকে সাহায্য করার কথা বলা হয়েছে।
কীভাবে : দুর্ভিক্ষ আর মন্বন্তর সেই ছেলেটির মধ্যে এনে দিয়েছে এক ভয়ংকর জান্তব বিকৃতি। তার জ্বলন্ত দুটো চোখ সন্ধান করছে ‘সেইসব খুনী’দের, যাদের ষড়যন্ত্রে শস্য-শ্যামলা বাংলা অনাহারের শ্মশানে পরিণত হয়েছে। সে শান্তি চায়। সে দুর্ভিক্ষ কবলিত হয়েও বেঁচে থাকার, উঠে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখে। আমাদের সকলের সাহায্যের হাত তার দিকে বাড়িয়ে দিতে হবে।
কেন : উদাসীন উচ্চবিত্ত আর স্বার্থপর মধ্যবিত্তের দরদ সমাজের এই সমাজের বৃহত্তর বৃহত্তর অসুখ সারাতে সক্ষম। মার্কসীয় আদর্শে বিশ্বাসী লেখকের স্পর্শকাতর মন তাই প্রতিটি মানুষের মনে ছড়িয়ে দিতে চায় সংবেদন, গড়ে তুলতে চায় সচেতনতা। আকালের ভয়ংকর অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে, পরস্পর হাত মিলিয়ে অসহনীয় সেই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার ইঙ্গিত দেন লেখক। তাই তিনি চান বাংলার বুকজোড়া সোনালি ফসলে, চাষির গোলাভরা ধানে, কারখানার অসংখ্য বন্ধনমুক্ত মানুষের আন্দোলিত বলিষ্ঠ হাতে বাংলায় সুখ-শান্তি ফিরে আসুক। সমবেত সাহায্যের হাত যুদ্ধ আর দুর্ভিক্ষের অন্ধকার থেকে ‘অমৃতের পুত্র মানুষ’কে আলোর উৎসে ফিরিয়ে এনে শ্রেণিহীন সমাজ গড়ে তুলবে।