(উত্তর)
সাধুর পরিচয় : সুভাষ মুখোপাধ্যায় ‘মেঘের গায়ে জেলখানা’ (‘আমার বাংলা’ গ্রন্থ) প্রবন্ধে ‘সাধুচরণের’ কথা বলেছেন। জয়নগরের প্রত্যন্ত গ্রামের বাসিন্দা সাধুচরণ শৈশবে পিতৃমাতৃহীন হয়। আত্মীয়-স্বজনদের ঘরে ঠাঁই না পেয়ে খিদের জ্বালায় প্রথম চুরি করে সে জেলে যায়। ক্রমে চুরিতে হাত পাকিয়ে সে প্রেসিডেন্সি জেলে বর্তমানে বন্দি।
সাধুচরণের বর্ণনা : কঙ্কালসার চেহারার সাধুচরণ দেয়ালে ‘চুরি করা মহাপাপ’ পোস্টার দেখে মুচকি হাসে। তার বাবা নামকরণের সময় ছেলে চোর হবে তা ভাবেনি। ছিঁচকে চুরি দিয়ে হাত পাকিয়ে বর্তমানে সে সিঁদেল চোরে পরিণত হয়েছে।
সে একসময় চুরির পেশা ছেড়ে দিয়ে সুস্থ জীবনযাপন করতে চেয়েছিল। চোরাই টাকায় জমি কিনেছিল, বিয়ে করেছিল এমনকি পুত্রসন্তানও লাভ করেছিল। কিন্তু সর্বক্ষণ চৌকিদারের খবরদারি, যে-কোনো চুরিতে থানায় ধরে নিয়ে যাওয়া আর সেখানে শারীরিক নিগ্রহ ও অর্থদণ্ড তাকে তিতিবিরক্ত করে তোলে। শেষপর্যন্ত সে সিদ্ধান্ত নেয় তার থেকে জেলের ভাত খাওয়া অনেক ভালো।
তবে সাধুচরণ তার ছেলের কথা মনে পড়লে মন খারাপ করে। কেনা জমি পতিত রয়েছে মনে পড়লেও তার কষ্ট হয়। সাধুচরণের জন্য ছেলেকে ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ শুনতে হয়। সে তার ছেলের নাম বিশে রেখেছিল। গ্রামের লোকে বিদ্রুপ করে বলে বেড়ায়, সাধুর ছেলে হবে বিশে ডাকাত।