(উত্তর)
সূচনা : সুভাষ মুখোপাধ্যায় রচিত ‘গারো পাহাড়ের নীচে” (‘আমার বাংলা’ প্রবন্ধ গ্রন্থ) নিবন্ধ থেকে আলোচ্য উদ্ধৃতিটি নেওয়া হয়েছে। এই নিবন্ধের শুরুতে গারো চাষিদের চাষ করবার বিশেষ পদ্ধতির উল্লেখ করেছেন প্রাবন্ধিক।
উদ্দেশ্য : ময়মনসিংহের উত্তর দিকে অবস্থিত গারো পাহাড়ের অধিবাসীরা বছরের নির্দিষ্ট সময়ে আগুন জ্বালায়। সেই আগুন লেখকের কাছে ‘রাবণের চিতা’ জ্বলার সমতুল্য মনে হয়েছে।
পাহাড়ি রুক্ষ অঞ্চলে ফসল ফলানোর জন্য এখানকার বাসিন্দারা প্রতি বছর চৈত্রমাসে পাহাড়ের শুকনো ঝোপঝাড়ে আগুন লাগিয়ে দেয়। দীর্ঘদিন জ্বলতে থাকা এই আগুন নিভে গেলে সেখানে তারা চাষবাস করে।
আগুন কীভাবে সাহায্য করে : আগুন লাগার কারণে জঙ্গলে দাবানল ছড়িয়ে পড়ে। তখন বনস্থিত প্রাণী, হিংস্র জন্তু-জানোয়ার—বাঘ, অজগর, হরিণ, শুয়োর প্রভৃতি প্রাণের ভয়ে ছুটে পালানোর চেষ্টা করে। তখন আদিবাসীরা তাদের শিকার করে ক্ষুধা নিবারণ করে।তাদের শিকার করা হরিণ, শুয়োরকে কেন্দ্র করে সন্ধ্যেবেলা গোল করে ঘিরে আনন্দে নাচ-গান শুরু করে। পাহাড়বাসীদের পরিশ্রমী জীবনে তখন যেন আনন্দের বার্তা বয়ে আসে।
অন্যদিকে আগুন নিভে গেলে পাহাড়ের গাঁ ঘেষে, উপত্যকায় ছাইয়ের যে পুরু আস্তরণ পড়ে তাতে ফসলের বীজ ছরিয়ে বাসিন্দারা ধান-তামাক প্রভৃতির চাষ করে। বন্য জন্তুদের শিকার এবং পোড়ো জমিতে ফসল ফলানোর ক্ষেত্রে আগুন তাদের সাহায্য করে।