[মান – ৫] “ জানো, কালীনাথ, একটা মেয়ে!” – এই মেয়েটির বর্ণনা যেভাবে বক্তা কালীনাথকে বর্ণনা করেছেন তার সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।

(উত্তর)

সূচনা : অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের একাঙ্ক নাটক ‘নানা রঙের দিন’ রুশ সাহিত্যিক আন্তন চেকভের ‘Swan Song’-এর অনুপ্রেরণায় রচিত। একজন বৃদ্ধ থিয়েটারওয়ালার জীবনের উত্থান-পতন, সুখ-দুঃখের  কাহিনি। আলোচ্য নাটকে বৃদ্ধ অভিনেতা রজনী চট্টোপাধ্যায়ের স্মৃতিতে উদ্ভাসিত তার যৌবনের প্রেমিকার প্রসঙ্গ উত্থাপিত হয়েছে। যে মেয়েটির প্রতি রজনীবাবুর অকৃত্রিম ভালোবাসা বৃদ্ধ বয়সেও অমলিন।

মেয়েটির বর্ণনা : নাটকের প্রধান চরিত্র রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় তার পুরোনো দিনের হারিয়ে যাওয়া প্রেমিকার কথা কালীনাথকে বলেছেন। স্বনামধন্য অভিনেতা রজনীকান্তের অভিনয়ে মোহিত হয়ে মেয়েটি নিজে থেকে তার সঙ্গে আলাপ করেছিল। ধনী পরিবারের অল্পবয়সি মেয়ে, ফর্সা সুন্দর, ছিপছিপে গড়ন, সহজসরল মনের অধিকারী। 

গ্রীষ্মের বিকেলে সূর্যাস্তের মেঘে অস্তমিত সূর্যের তেজ যেমন কোনো অংশে কম থাকে না, তেমনি আপাত সহজসরল মনের মেয়েটির সারল্যের মধ্যে ছিল তেজোদীপ্তি। আশ্চর্য ক্ষমতার অধিকারী মেয়েটির গভীর কালো চোখ কল্পনা করে অভিনেতা অন্ধকার রাতে ‘অচেনা দিনের আলো’ দেখতে পেতেন। পাহাড়ি খরস্রোতা নদীর মতো একরাশ চুল যেন ‘অমোঘ শক্তিতে’ দুর্গম পাহাড় ধ্বংস করার ক্ষমতা রাখে। রজনী ভেবেছেন এ ঢেউ যদি তার জীবনকে ভাসিয়ে নিয়েও যায় তাতে ক্ষতি নেই। আজ এতকাল পরও অভিনেতার মনে প্রেমিকার সুখস্মৃতি সজীব হয়ে রয়েছে। তার মনে হয়েছে ভোরের আলোর থেকে সুন্দর মেয়েটির কথা তিনি মরে গিয়েও ভুলবেন না,

“ সেই যেব তার আমার দিকে সেই একরকম অদ্ভুত করে চেয়ে থাকা, মরে যাব তবু ভুলব না, তার সেই আশ্চর্য ভালোবাসা।”

error: সর্বস্বত্ত্ব সংরক্ষিত