[মান – ৫] ‘অনেক, অনেক দূরে আছে মেঘ-মদির মহুয়ার দেশ।’—‘মহুয়ার দেশ’ কাকে, কেন বলা হয়েছে? কবিতাটিতে স্বপ্নভঙ্গের কোন্ কথা আছে?

(উত্তর)

মহুয়ার দেশ : কবি সমর সেন বিরচিত ‘মহুয়ার দেশ’ কবিতাটি নাগরিক জীবনযন্ত্রণার বিপরীতে অবস্থিত কবির কল্পজগতের যেন ভাষারূপ। শহুরে জীবনের ক্লান্তি থেকে বহু দূরে অবস্থিত চিরপ্রশান্তিময় সজীবতার লীলাভূমিই হল কবির কাঙ্ক্ষিত ‘মহুয়ার দেশ’।

নাগরিক কবি নগরের দূষণ থেকে বাঁচতে বহুদূরের মেঘ-মদির প্রকৃতির মাঝে আত্মগোপন করতে চান। মহুয়া ফুলের মাতাল করা গন্ধে সুরভিত হয়ে কবি দূর করতে চান তাঁর সব ক্লান্তিকে। এই দেশ সুগন্ধ আর সৌন্দর্যে পূর্ণ বলেই এই দেশ ‘মহুয়ার দেশ’ নামে নামাঙ্কিত। এই রহস্যময় দেশে রয়েছে—

  • দেবদারুর দীর্ঘছায়া
  • নির্জন নিঃসঙ্গতা
  • সমুদ্রের দীর্ঘশ্বাস
  • মহুয়ার সুগন্ধ

স্বপ্নভঙ্গ : শহরের বিষাক্ত ধোঁয়া ও দূষণ থেকে মুক্তি পেতে কবি মহুয়ার দেশে আশ্রয় নিলেও কাম্য শান্তি খুঁজে পান না সেখানে। দূর থেকে যে দেশকে চির প্রশান্তির স্থান বলে মনে হয়েছিল, বাস্তবে সেখানেও দেখা যায় পুঁজিবাদী আগ্রাসন। ‘কয়লা খনির গভীর, বিশাল শব্দ’ রাতের নিস্তব্ধতাকে খান খান করে দেয়। কালিমালিপ্ত করে প্রকৃতিলগ্ন মানুষগুলির দেহ এবং মন। কবি যে স্বপ্নপূরণের আকাঙ্ক্ষায় মহুয়ার দেশের আকর্ষণে ছুটে এসেছিলেন, তাঁর সেই স্বপ্ন অপূর্ণই থেকে যায়।

error: সর্বস্বত্ত্ব সংরক্ষিত