[মান – ৫] যে ঘরে চরিত্রেরা রাতের জন্য আশ্রয় নিয়েছিল, সেই ঘরটির বর্ণনা দাও।

সূচনা : সুখ্যাত লেখক প্রেমেন্দ্র মিত্র ‘তেলেনাপোতা আবিষ্কার’ গল্পে নগরজীবন থেকে অখ্যাত, অজ্ঞাত গ্রামে আসা এক যুবকের উপলব্ধির কথা শুনিয়েছেন। আশ্রয় নিয়েছেন গ্রামেরই একটি ভগ্ন অট্টালিকায়।

ঘরের বর্ণনা : ব্যস্ত শহুরে মধ্যবিত্ত জীবনের ফাঁকে দুই বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে কথক এসেছেন তেলেনাপোতায়। যে ঘরে তারা রাত কাটানোর ছাড়পত্র পেয়েছিলেন সেই ঘর বসবাসের পক্ষে অনুপযুক্ত৷ কেননা, গল্পকথক দেখেছেন এমন কয়েকটি দৃশ্য যা মোটেই সুখপ্রদ নয়। যেমন—

  • ক) ঘরের ঝুল, জঞ্জাল, ধুলো পরিষ্কারের ব্যর্থ চেষ্টা হয়েছে।
  • খ) অস্পষ্ট ভ্যাপসা গন্ধ ঘরটিকে আমোদিত করেছে।
  • গ) ঘরটির ছাদ ও দেয়াল থেকে জীর্ণ পলস্তারা খসে পড়েছে।
  • ঘ) দু-তিনটি চামচিকা নিজেদের অধিকার সম্পর্কে অতি সচেতন হয়ে রীতিমতো বিবাদ শুরু করেছে।

রাতের অন্ধকার যখন গভীর থেকে গভীরতর হচ্ছিল ঠিক সেই সময় মশা নবাগতদের অভিনন্দন জানাচ্ছিল। এই মশারা ছিল ‘ম্যালেরিয়া দেবীর অদ্বিতীয় বাহন অ্যানোফিলিস।’ গল্পকথক নিদ্রাবিলাসী নন। তাই যখন ছাদে ওঠেন তখন তার চোখে ধরা পড়ে ভাঙনের নানা চকিত দৃশ্যাবলি,

অধিকাংশ জায়গাতে আলিসা ভেঙে ধুলিসাৎ হয়েছে, ফাটলে ফাটলে অরণ্যের পঞ্চম বাহিনী ষড়যন্ত্রের শিকড় চালিয়ে ভিতর থেকে এ অট্টালিকার ধ্বংসের কাজ অনেকখানি এগিয়ে রেখেছে। কৃষ্ণপক্ষের মৃতপ্রায় জ্যোৎস্নায় ম্লান আলোকে চারিদিক মোহময় হয়ে উঠেছিল।

error: সর্বস্বত্ত্ব সংরক্ষিত