[মান – ৫] গোরুর গাড়িতে করে যাওয়ার অভিনব অভিজ্ঞতার বর্ণনা দাও।

রচনা পরিচয় : আধুনিক বাংলা সাহিত্যের উল্লেখযোগ্য কথাকার প্রেমেন্দ্র মিত্রের ‘তেলেনাপোতা আবিষ্কার’ গল্পে কাল্পনিক গ্রাম তেলেনাপোতায় যাবার প্রসঙ্গ রয়েছে। সেখানে যাবার প্রসঙ্গে এসেছে গোরুর গাড়ির কথা।

অভিনব অভিজ্ঞতা : যাতায়াতের মাধ্যম হিসেবে গোরুর গাড়ির ব্যবহার গ্রাম-বাংলার প্রান্তবর্তী অঞ্চলে প্রায়শ দেখা যায়। আলোচ্য গল্পে নগর জীবনে অভ্যস্ত গল্পকথক ও তার দুই বন্ধু একটি বাসস্টপে নেমে পড়েন। সেখানে দাঁড়িয়ে তারা আবছা অন্ধকারে একটি ক্ষীণ আলো দেখতে পান। এবং সেখান থেকে তারা একটি গোরুর গাড়ির আগমন হতে দেখে নিশ্চিন্ত হন।

জঙ্গলের ভিতর থেকে ‘ধীর মন্থর দোদুল্যমান গতিতে’ আসা গোরুর গাড়িটির বিবরণ দিয়ে গল্পকার প্রেমেন্দ্র মিত্র চলচ্চিত্রের মতো দৃশ্যমান জগতের ছবি অঙ্কন করেছেন। তিনি লিখেছেন—‘যেমন গাড়িটি তেমনি গোরুগুলি। মনে হবে পাতালের কোনো বামনের দেশ থেকে গোরুর গাড়ির এই ক্ষুদ্র সংক্ষিপ্ত সংস্করণটি বেরিয়ে এসেছে।‘

বৃথা বাক্য-ব্যয় না করে গল্পকথক ও তার বন্ধুরা গাড়িতে চেপে বসেছিলেন। গাড়িটি তাদের নির্দেশিত তেলেনাপোতা অভিমুখে যাত্রা করে। জায়গার নিতান্তই অভাবের কারণে তারা অত্যন্ত কষ্টে বসেছিলেন।

ঘন অন্ধকার অরণ্যের বুক চিরে গাড়িটি যখন চলতে থাকে তখন প্রতি মুহূর্তে মনে হয় ‘কালো অন্ধকারের দেয়াল বুঝি অভেদ্য’। গল্পকথকের মনে হতে থাকে, তারা যেন পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন এক অন্ধকার দ্বীপে অবস্থান করছে। গল্পকার লিখেছেন—‘অনুভূতিহীন কুয়াশাময় এক জগৎ শুধু আপনার চারিধারে।‘

গল্পকথকদের পথ চলার সময় আকাশে কৃষ্ণপক্ষের স্নান আলোর চাঁদ দেখা যাচ্ছিল। সেই অনুজ্জ্বল আলোয় দেখা যাচ্ছিল—

  • ক) প্রাচীন মন্দির।
  • খ) প্রাচীন অট্টালিকার ধ্বংসাবশেষ।
  • গ) শিহরণ জাগানো নানা দৃশ্য।

একাধিকবার বাঁক ঘুরে অবশেষে গাড়িটি একটি জীর্ণ, ভগ্ন, প্রাচীন অট্টালিকার সামনে কথকদের নামিয়ে দিয়েছিল।

error: সর্বস্বত্ত্ব সংরক্ষিত