(ক) বাংলা ভাষার আদি নিদর্শন চর্যাপদ আবিস্কার করেন মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী, ১৯০৭ সালে নেপালের রাজ দরবার থেকে।
(খ) প্রাচীন বাংলা ভাষায় রচিত চর্যাপদের বহু শব্দ এখন অপ্রচলিত। চর্যার কবিগণ সংকেত বহুল শব্দ ব্যবহার করেছেন চর্যাপদে। তাই এর ভাষাকে আলো-আঁধারি বা ‘সন্ধ্যাভাষা’ বলা হয়েছে।
(গ) বাংলা সাহিত্যে চর্যাপদের গুরুত্ব =
(১) চর্যা প্রাচীন বাংলা সাহিত্যের একমাত্র নিদর্শন,
(২) বাংলার লোকায়ত জীবন ও সংস্কৃতির কথা এখানে প্রথম পাওয়া যায়,
(৩) কাব্যসংগীত ও সাধনসংগীতের প্রথম নিদর্শনও চর্যা,
(৪) পাদাকুলক, প্রত্নমাত্রাবৃত্তের প্রথম ব্যবহার হয় এখানে,
(৫) প্রাচীন বাংলাভাষার প্রথম পূর্ণ পরিচয়ও চর্যাপদে মেলে।
চর্যাকারেরা অন্ত্যজ, ব্রাত্য, লোকায়ত মানুষের জীবনের কথা বলেছেন। চর্যাপদের মধ্যে উচ্চবিত্ত, মার্জিত মানুষের পরিশীলিত জীবন উপস্থাপিত হয় নি। সমাজের প্রান্তবর্তী ডোম, শবর, ব্যাধ, তাঁতি, মাঝি-মাল্লা প্রমুখের জীবনের চালচিত্রই চর্যার মূল বিষয় হয়ে উঠেছে।