[উ] গণিতশাস্ত্রের উৎপত্তি সম্পর্কে পণ্ডিতগণের মধ্যে মতভেদ দেখা যায়। কেউ ব্যাবিলনকে, কেউ-বা মিশরকে, আবার কেউ-বা ভারতবর্ষকে গণিতশাস্ত্রের জন্মস্থানরূপে বর্ণনা করেছেন।
‘গণিত’ শব্দটির অর্থ সংখ্যা বা অঙ্ক গণনার দ্বারা যে পদ্ধতির প্রয়োগ হয়। ব্যষ্টি বা সমষ্টির দ্বারা নির্ণয় পদ্ধতিকে গণিত বলে।
শাখাসমূহ—গণিতের দুটি প্রধান শাখা (১) সংখ্যাগণিত (পাটিগণিত ও বীজগণিত) (২) আকৃতিগণিত (জ্যামিতি)।
প্রাচীন সাহিত্যে গণিত
বৈদিক সাহিত্যের অন্তর্গত নানা শৃল্বসূত্রে বিভিন্ন গাণিতিক পদ্ধতির উল্লেখ পাওয়া যায়। বৈদিক যাগযজ্ঞের প্রয়োজনে নানা বেদি নির্মাণে জ্যামিতি বিষয়ক জ্ঞানের ধারণা জন্মে।
পাটিগণিত—প্রাচীনকালে জ্যোতির্বিদগণ ফলকের উপরে ধুলো ছড়িয়ে তার উপরে আঁকজোক করে বিভিন্ন সমাধান করতেন। এই পদ্ধতিকে ধূলিকর্ম বলে। ব্রহ্মগুপ্ত, দ্বিতীয় ভাস্করাচার্য, দ্বিতীয় আর্যভট্ট প্রমুখ তাঁদের গ্রন্থে গণিতাধ্যায় নামক একটি আলাদা অধ্যায় যুক্ত করেছেন। শ্রীধরাচার্য গণিতের বিশেষ ধারাকে বোঝাতে ‘পাটিগণিত’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন। তাঁর গ্রন্থের নাম ‘পাটিগণিতসার’।
বীজগণিত—আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ২০০০ শতকে ভারতবর্ষে বীজগণিতের চর্চা শুরু হয়। শূল্কসূত্রে বীজগণিতের নানা তত্ত্ব আছে।
জ্যামিতি—বৈদিক যুগ থেকে আর্যগণ জ্যামিতিতে পারদর্শী ছিলেন। বৈদিক যুগে যজ্ঞবেদি নির্মাণে ক্ষেত্রমিতির ব্যবহার জানা ছিল।
গণিতশাস্ত্রের উল্লেখযোগ্য গ্রন্থাবলি—প্রথম আর্যভট্টের—আর্যভট্টীয়, ব্রহ্মগুপ্তের—ব্রহ্মস্ফুটসিদ্ধান্ত, দ্বিতীয় ভাস্করাচার্যের—সিদ্ধান্তশিরোমণি এবং লীলাবতী, দ্বিতীয় আর্যভট্টের—আর্যসিদ্ধান্ত, শ্রীধরের—ত্রীশতী প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।