[উ] প্রাচীন ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানের ইতিহাসে একটি উজ্জ্বল নাম আর্যভট্ট। প্রথম আর্যভট্ট খ্রিস্টীয় পঞ্চম শতকের ব্যক্তি। প্রাচীন ভারতীয় সিদ্ধান্ত জ্যোতির্বিদ্যার প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা হলেন তিনি। অবিস্মরণীয় এই জ্যোতির্বিদ ‘গুপ্তযুগের নিউটন’ নামেও অভিহিত হন।
গ্রন্থাবলি—আর্যভট্ট তিনটি গ্রন্থ রচনা করেন। এগুলি হল—
(১) ‘আর্যভট্টীয়’ = এই গ্রন্থেই বলা হয়েছে, পৃথিবী সূর্্যের চারিদিকে ঘোরে। চন্দ্রগ্রহণ ও সূর্যগ্রহণের প্রকৃত কারণ তিনি এই গ্রন্থেই উল্লেখ করেন।
(২) ‘আর্যাষ্টশতক’ = তিন পরিচ্ছেদে বিভক্ত এই গ্রন্থে গণিত আলোচনা রয়েছে।
(৩) ‘দশগীতিকাসূত্র’ = সৌরমণ্ডল তথা মহাকাশ পর্যবেক্ষণের নানা তত্ত্ব আলোচিত হয়েছে।
জ্যোতির্বিজ্ঞানে অবদান
আর্যভট্টের জ্যোতির্বিজ্ঞান গবেষণার প্রধান বৈশিষ্ট্য নতুন নতুন পর্যবেক্ষণ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ। তিনিই প্রথম জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে গ্রহগুলির ব্যাখ্যা করেন। বীজগণিতকে ভারতীয় গণিতের সঙ্গে সর্বপ্রথম তিনিই পরিচয় করিয়ে দেন। গ্রহদের অবস্থান গণনার প্রয়োজনে তাঁর হাতে জ্যামিতির বহু নতুন নতুন তত্ত্ব আবিষ্কৃত হয়েছে। তাঁর অন্যতম গাণিতিক আবিষ্কার হচ্ছে ‘পাই’-এর মান নির্ণয়।
মূল্যায়ন—জ্যোতির্বিজ্ঞানে বিশেষ অবদানের জন্য আর্যভট্ট স্মরণীয়। তাঁকে ‘গুপ্তযুগের নিউটন’ বলা হয়। পৃথিবীর সূর্যকে প্রদক্ষিণের কথা এবং পৃথিবীর আহ্নিক গতির ব্যাখ্যা তাঁর অবদান। এ ছাড়া বর্গমূল, ঘনমূল নির্ণয়, সূর্য ও অন্যান্য গ্রহের আবর্তন প্রভৃতির আবিষ্কারের জন্য আর্যভট্ট চিরদিন স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।