নাট্যকার কালিদাসের প্রতিভা সম্পর্কে লেখো।

[উ] সরস্বতীর বরপুত্র মহাকবি কালিদাস। সংস্কৃত সাহিত্যের ইতিহাসে শ্রেষ্ঠ নাট্যকার হিসেবে তিনি পরিচিত। কালিদাসের তিনটি নাটক–(১) ‘মালবিকাগ্নিমিত্রম্’ (রাজসভার জন্য), (২)‘বিক্রমোর্বশীয়ম্’ (লোকসভার জন্য), এবং (৩) ‘অভিজ্ঞানশকুন্তলম্‌’ (বিদগ্ধ সভার জন্য), যা প্রেমমূলক নাটক।

মালবিকাগ্নিমিত্রম্‌ = এটি ঐতিহাসিক পটভূমিতে রচিত পাঁচ অঙ্কের নাটক।নাটকটি কালিদাসের প্রথম বয়সের রচনা। শুঙ্গবংশের রাজা অগ্নিমিত্র এবং তার প্রধানা মহিষী ধারিণীর পরিচারিকা মালবিকার প্রেমকাহিনি এই নাটকের মূল কথাবস্তু। নাটকটি সমকালীন মঞ্চসফল নাটকগুলির অন্যতম ছিল।

বিক্রমোর্বশীয়ম্‌ = কালিদাসের দ্বিতীয় পঞ্চমাঙ্ক নাটক। স্বর্গের অপূর্ব সুন্দরী অপ্সরা ঊর্বশী ও মর্ত্যের রাজা পুরূরবার প্রণয়কাহিনিই এই নাটকের মূল বিষয়। নায়ক পুরূরবা প্রবল বিক্রমের সঙ্গে যুদ্ধ করে কেশী দানবের হাত থেকে ঊর্বশীকে উদ্ধার করেছিলেন। তাই নাটকের এরূপ নামকরণ।

অভিজ্ঞানশকুন্তলম্‌ = কালিদাসের সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যকীর্তি এই সাত অঙ্কের নাটক। পুরুবংশের রাজা দুষ্যন্ত এবং স্বর্গের অপ্সরা মেনকার কন্যা শকুন্তলার প্রণয়কাহিনি এই নাটকের উপজীব্য বিষয়। কালিদাসের কবিপ্রতিভা এই নাটকে সর্বাধিক লক্ষ করা যায়। এ প্রসঙ্গে বলা হয়—“কালিদাসস্য সর্বস্বম্‌ অভিজ্ঞানশকুন্তলম্‌”।

মূল্যায়ন = কালিদাসের কবি প্রতিভা ভারতবর্ষের সীমা অতিক্রম করে বহির্ভারতে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রখ্যাত জার্মান কবি গ্যেটে বলেছেন – “কেহ যদি তরুণ বৎসরের ফুল ও পরিণত বৎসরের ফল, কেহ যদি মর্ত্য ও স্বর্গ একত্র দেখিতে চান তবে শকুন্তলায় তাহা পাইবেন।” কালিদাস মাবমহত্ত্বকে যথাযথভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছিলেন বলেই কালিদাস পরবর্তী মানবসমাজে এতখানি গ্রহণীয় হয়েছেন।

error: সর্বস্বত্ত্ব সংরক্ষিত