[উ]
সূচনা—ভাষাবিদ্গণ অনুমান করেন খ্রিস্টপূর্ব ১৫০০ শতকের পূর্বে মূল ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাগোষ্ঠী থেকে একটি অংশ নিজেদের আদি বাসভূমি ত্যাগ করে ভারতবর্ষ ও ইরান পারস্যে প্রবেশ করে। এই শাখার ভাষাকেই বলা হয় ইন্দো-ইরানীয়। সংস্কৃত এসেছে ইন্দো-ইরানীয় ভাষাগোষ্ঠীর একটি শাখা ভারতীয় আর্যভাষা থেকে। তাই ভারতীয় আর্যভাষার গুরুত্ব বেশি।
‘সতম’-এ ইন্দো-ইরানীয়—ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাগোষ্ঠীর ‘সতম্’ গুচ্ছের চারটি শাখার মধ্যে ‘ইন্দো-ইরানীয়’ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই শাখার দুটি বিভাগ – (১) ভারতীয় আর্যভাষা এবং (২) ইরানীয় আর্যভাষা। ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাগোষ্ঠীর প্রাচীনতম লিখিত নিদর্শন ভারতীয় আর্যভাষাতেই সংরক্ষিত হয়েছে। সেটি হল ঋগ্বেদ।
ভারতবর্ষে ভারতীয় আর্যভাষা—সমগ্র ভারতবর্ষে ভারতীয় আর্যভাষার প্রাধান্য অনেক বেশি। প্রচীন ভারতীয় আর্যভাষায় কয়েকটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হলো—
(১) দক্ষিণ ভারত ছাড়া সমগ্র ভারতে ভারতীয় আর্যভাষার প্রাধান্য রয়েছে।
(২) এই ভাষা থেকে আগত আধুনিক প্রাদেশিক ভাষার উৎপত্তি হয়েছে, যেমন – বাংলা, হিন্দি, অসমিয়া, ওড়িয়া, পাঞ্জাবি, গুজরাটি, মারাঠি প্রভৃতি।
(৩) ভারতীয় আর্যভাষা থেকে আগত প্রাদেশিক ভাষায় ভারতীয়রা বেশি কথা বলে।
(৪) ভারতীয় আর্যভাষার তিনটি স্তরের সাহিত্যিক নিদর্শনগুলি খুবই সমৃদ্ধ। যেমন – প্রাচীন স্তর: সমগ্র বৈদিক সাহিত্য, ইতিহাস, পুরাণ ও ব্যাপক সংস্কৃত ধ্রুপদি সাহিত্য। মধ্য স্তর : পালি, প্রাকৃত অপভ্রংশে রচিত গ্রন্থাবলি। নব্যস্তর বিভিন্ন প্রাদেশিক ভাষায় রচিত গ্রন্থাবলি। বাংলা হল এই গোষ্ঠীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভাষা।