“তাতে চেংমানের চোখ কপালে উঠল”–চেংমান কে? তার চোখ কপালে ওঠার কারণ কী ? [অথবা] “নতুন ছাতি মাথায় দিয়ে মহাফূর্তিতে বাড়ির দিকে সে চলল”—কার কথা বলা হয়েছে? সে নতুন ছাতি কীভাবে পেল? (ছাতির বদলে হাতি)

।। ছাতির বদলে হাতি ।।

[উ] সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের ‘ছাতির বদলে হাতি’ (‘আমার বাংলা’ প্রবন্ধ) নিবন্ধের এক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হল চেংমান নামক গারো চাষি, যে ধূর্ত মহাজনের কৌশল না বুঝতে পেরে সর্বহারা হয়েছিল।

ছাতি কীভাবে পেয়েছিল—হালুয়াঘাট বন্দরের মনমোহন মহাজনের বন্ধকি-তেজারতির ফাঁদে পড়েই সর্বস্বান্ত হয়েছিল গারো চাষি চেংমান। হালুয়াঘাট বন্দরে সওদা করতে এসে মুশলধারে বৃষ্টিতে আটকে গিয়েছিল চেংমান। তখন সে মহাজনের দোকানের ঝাঁপির নীচে আশ্রয় নেয়। চেংমানের দুরবস্থা দেখে করুণার অবতার হয়ে মনমোহন খাস কলকাতা থেকে আনা আনকোরা নতুন একটা ছাতা তাকে দিয়ে দেয়। এই ঘটনায় চেংমান হতবাক হলেও, মনমোহন তাকে ভরসা দিয়ে বলে সুবিধামতো পয়সা দিলেই হবে। সরলহৃদয় চেংমান মহাজনের কৌশল না বুঝে বাড়ি চলে যায়।

পরিণতি—বারবার পাওনা মেটাতে গেলে মহাজন আমল দেয় না দেখে ক্রমে চেংমান ভুলে যায় সেই ধারের কথা। কয়েক বছর পর মনমোহন তাকে ধরে ধার মেটাতে চাইলে হিসাব দেখে চেংমান অবাক হয়ে যায়। কারণ সামান্য ছাতার বদলে মহাজন দাবি করে হাজারখানেক টাকা। চক্রবৃদ্ধি সুদের হারে যা প্রায় একটা হাতির দামের সমান। এই ঘটনায় সামান্য গারো চাষি চেংমানের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। মহাজন তাঁর কাছ থেকে ছত্রিশ বিঘে জমি ছাতার বদলে দখল করেছিল।

error: সর্বস্বত্ত্ব সংরক্ষিত