‘বিভাব’ নাটকে নাট্যরীতির যে নতুনত্ব প্রকাশ পেয়েছে, তা আলোচনা করো।

[উ] ‘বহুরূপী’ থিয়েটারের প্রতিষ্ঠাতা নাট্যকার শম্ভু মিত্র রচিত ‘বিভাব’ নাটকে প্রচলিত নাট্যভাবনার বাইরে এক অভিনব নাট্যরীতি প্রয়োগ করা হয়েছে। নাটক অভিনয় চিরাচরিত রীতি, সাজসজ্জা ছাড়াও যে সম্ভব, তা এই নাটক পাঠে উপলব্ধি করা যায়।

নাট্যরীতির বিশেষত্ব

নাট্যকার ‘বিভাব নাটকে’ প্রথাগত নাট্যরীতি থেকে সরে এসে ভঙ্গিসর্বস্ব নাট্যরীতির প্রয়োগ ঘটিয়েছেন। এক্ষেত্রে পুরোনো বাংলা নাটক, উড়ে যাত্রা, মারাঠি তামাশা, জাপানের কাবুকি থিয়েটার তাঁর প্রেরণার উৎস। সেইসঙ্গে নাটক উপস্থাপনার জন্য আবশ্যক উপকরণের অভাব সত্ত্বেও আঙ্গিক নির্ভরতায় ‘বিভাব’ নাটকটি মঞ্চস্থ হয়।

            ভঙ্গিসর্বস্ব এই নাট্যরীতিতে হাস্যোদ্দীপক মূকাভিনয়ের সংমিশ্রণ ঘটে। অমরের বাড়ির কড়া নাড়া, তাকানোর ভঙ্গিতে দোতলা বাড়ি বোঝানো, দরজা ঠেলা ও সিঁড়িতে ওঠার ভঙ্গি, কল্পিত জানালা খোলা, চেয়ারে বসা, সিগারেট ধরানো ও খাওয়ার ভঙ্গি, চায়ের কাপ গ্রহণ ও পানের ভঙ্গি, রবীন্দ্রসঙ্গীতে গাছের ডাল ধরার ভঙ্গি ইত্যাদি ক্ষেত্রে মূকাভিনয়ের অদ্ভুত প্রয়োগ ঘটেছে।

            নাটকটিতে কাহিনি পরম্পরায় হাসির মধ্যে দিয়ে ব্যঙ্গ করা হয়েছে সমকালীন অভাব-অনটন, শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার তাগিদে সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচার প্রভৃতিকে, যা নাটকটিকে বিশিষ্ট করে তুলেছে।

error: সর্বস্বত্ত্ব সংরক্ষিত