একাদশ শ্রেণির কবিতা সংকলনের মধ্যে মধুসূদন দত্তের ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’ পত্রকবিতা একটি অন্যতম কবিতা। পরীক্ষা উপযোগী সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর এখানে আলোচিত হলো।
প্রশ্নমান – ১
· মধুসূদনদত্ত -– ১৮২৪ – ১৮৭৩
· কবিতাটিঅমিত্রাক্ষর ছন্দে রচিত।
· উৎস – বীরাঙ্গনা কাব্য। কবিতাটি এই কাব্যের একাদশ সর্গের অন্তর্গত। অর্থাৎ ১১তম পত্র।
· মাহেশ্বরীপুরীশ্বর – রাজা নীলধ্বজ
· পান্ডুরথী – অর্জুন
· কুলটানারী – কুন্তী
· সত্যবতী – ব্যাসদেবের মাতা
· সত্যবতী – ধীবর কন্যা
· খান্ডব – একটি বন
· শিখণ্ডী – বিরাট রাজার পুত্র / পূর্বজন্মে ছিলেন অম্বা
· মহারথী–প্রথা – যুদ্ধের প্রকৃত নিয়ম
· কৌন্তেয় – কুন্তীর পুত্র, এখানে অর্জুন
প্রতিবিধিৎসিতে |
প্রতিবিধান করতে |
ফাল্গুনী / কিরীটি / পার্থ |
অর্জুন |
লোহে |
রক্তে |
টুট |
ভেঙে ফেল |
স্বৈরিণী |
স্বেচ্ছাচারী নারী |
হৃষীকেশ |
বিষ্ণু |
দ্বৈপায়ন ঋষি |
ব্যাসদেব |
পীতাম্বর |
শ্রীকৃষ্ণ |
ইন্দিরা |
লক্ষ্মী |
পাঞ্চালী |
দ্রৌপদী |
মৃগেন্দ্র |
সিংহ |
ভালে |
কপালে |
কুরিঙ্গী |
হরিনী |
প্রভঞ্জন |
বাতাস |
বাম |
বিমুখ |
বিজন |
মনুষ্যহীন |
বিবরে |
গর্তে |
ক্ষত্রকুলবালা |
ক্ষত্রিয় কুলের মেয়ে |
ক্ষত্র–কুলবধূ |
ক্ষত্রিয় কুলের বধূ |
জাহ্নবী |
গঙ্গা |
কৃতান্তনগর |
যমপুরী |
মহেষ্বাস |
মহা ধনুর্ধর |
পুত্রহা |
পুত্রের হত্যাকারী |
নলিনী |
পদ্ম |
[১] এই পত্র কবিতার উপাদান মহাভারতের কোন পর্বে আছে ?
উ– অশ্বমেধ পর্বে [১৪তম সর্গ]।
[২] জনা তাঁর স্বামীকে অভিশাপ দিয়েছে কেন ?
উ– জনার স্বামী পুত্রহন্তাকে মিত্র করেছেন বলে।
[৩] নীলধ্বজ নরনারায়ন জ্ঞানে কাকে পুজো করছেন ?
উ– অর্জুনকে।
[৪] ‘ছদ্মবেশে লক্ষরাজে ছলিল দুর্মতি’ – কে কার স্বয়ম্বরে ছলজনা করেছিল ?
উ– অর্জুন দ্রৌপদীর স্বয়ম্বর সভায় ছলনা করেছিল।
[৫] কবিতায় কাকে চন্ডাল ও কাকে ব্রাহ্মণ বলা হয়েছে ?
উ– অর্জুনকে চন্ডাল এবং নীলধ্বজকে ব্রাহ্মণ বলে উল্লেখ করেছেন জনা।
[৬] কর্ণ যুদ্ধক্ষেত্রে বিফল হগলেন কিভাবে ?
উ– কৃষ্ণের কৌশলে।
[৭] পার্থ খান্ডব দহনে সফল হয়েছিলেন কেন ?
উ– কৃষ্ণের সহায়তায়।
[৮] পিতামহ ভীষ্মের মৃত্যু হয়েছিল কেন ?
উ– শিখন্ডীর সাহায্যে পার্থ ভীষ্মকে বধ করেছিলেন।
[৯] ‘এ জনাকীর্ণ ভবস্থল আজি বিজন জনার পক্ষে’ – কারণ কী ?
উ– কারণ জনার একমাত্র পুত্রের মৃত্যু হয়েছে।
[১০] এই কবিতায় তথা কাব্যে কোন বিদেশি কবির কাব্যের ছায়া আছে ?
উ– রোমক কবি ওভিদ এবং তাঁর কাব্য ‘হিরোয়িক এপিসল’ [Heroic Epistle]।
[১১] আলোচ্য পত্রকবিতার উৎস কী ?
উ– বীরাঙ্গনা কাব্য। ১৮৬২ সাল।
[১২] বীরাঙ্গনা কী ধরনের কাব্য ?
উ– পত্রকাব্য।
[১৩] জনার অভিশাপ কার বিরুদ্ধে ?
উ– পার্থের বিরুদ্ধে।
[১৪] ফাল্গুনী কে ?
উ– পার্থ অর্থাৎ অর্জুন।
[১৫] ‘মহেষ্বাস’ কথার অর্থ কী ?
উ– মহা ধনুর্ধর।
[১৬] ইন্দিরা কে ?
উ– লক্ষ্মী।
[১৭] কুরঙ্গী –এর অর্থ কী ?
উ– হরিণ।
[১৮] ‘যুঝিতে’ পদের অর্থ কী ?
উ– যুদ্ধ করতে।
[১৯] কৃতান্ত নগর বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন ?
উ– যমপুরীকে বুঝিয়েছেন।
[২০] পুত্রহা পদের অর্থ ;লেখ।
উ– পুত্রহন্তা।
[২১] ‘নিবাইতে এ শোকাগ্নি ফাল্গুনীর লোহে’ – লোহে শব্দের অর্থ লেখ।
উ– রক্ত।
[২২] ‘শাশুড়ির যোগ্য বধূ’ – শাশুড়ি ও বধূ কারা ?
উ– শাশুড়ি হলেন কুন্তি এবং বধূ হলেন পান্ডবদের স্ত্রী দ্রৌপদী।
[২৩] কবিতায় কুলাচার্য বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে ?
উ– ব্যাসদেবের কথা বলা হয়েছে ?
[২৪] ভীষ্মের প্রকৃত নাম কী ?
উ– দেবব্রত।
[২৫] জনা কোথায় প্রাণ বিসর্জনের কথা বলেছেন ?
উ– জাহ্নবীর জলে।
[২৬] পুত্রহা রিপু বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে ?
উ– অর্জুনকে।
[২৭] স্বৈরিণী কাকে বলা হয়েছে ?
উ– কুন্তীকে।
[২৮] নীলধ্বজ কোথাকার রাজা ?
উ– মাহেশ্বরী পুরীর।
[২৮] ‘কেমনে এ অপমান সব ধৈর্য ধরি’ – এখানে কোন অপমানের কথা বলা হয়েছে ?
উ– ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’ কবিতায় উক্তিটি জনার।
একমাত্র পুত্র প্রবীর অর্জুনের সাথে অন্যায় যুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছেন। অথচ জনার স্বামী নীলধ্বজ অর্জুনের সঙ্গে মিত্রতা করেছেন। এই বিষয়কেই অপমানজনক বলা হয়েছে।
[২৯] ‘নিবাইতে এ শোকাগ্নি ফাল্গুনীর লোহে’ – তাৎপর্য লেখ।
উ– এখানে বক্তা জনা পুত্রহন্তা অর্জুনের মৃত্যু চান। প্রবল প্রতিহিংসায় স্বামী নীলধ্বজকে যুদ্ধযাত্রায় অংশগ্রহণের কথা শুনিয়েছেন। তিনি ‘ফাল্গুনীর লোহে’ অর্থাৎ অর্জুনের রক্তে তাঁর শোকাগ্নি নির্বাপিত করার কথা এই অংশে প্রকাশ পেয়েছে।
[৩০] ‘টুট কিরীটির গর্ব আজি রণস্থলে’ – বক্তা এখানে কী বোঝাতে চেয়েছেন ?
উ– পুত্রের হত্যাকারী অর্জুনকে যথোচিত শাস্তি প্রদানের ইচ্ছায় স্বামীকে যুদ্ধে যাওয়ার জন্য উদ্দীপ্ত করেছিল জনা। মনের তীব্র ক্রোধে জনা কিরীটি অর্থাৎ অর্জুনের গর্ব নাশ করতে চেয়েছিলেন।
[৩১] ‘অন্যায় সমরে মূঢ় নাশিল বালকে’ – অন্যায় সমরের পরিচয় দাও।
উ– অশ্বমেধের ঘোড়া নিয়ে অর্জুন মাহেশ্বরী পুরীতে প্রবেশ করলে রাজপুত্র প্রবীর অশ্বমেধের অশ্ব বাধা দেয়। তখন যুবরাজ প্রবীরের সঙ্গে পার্থের যুদ্ধের সূচনা হয়। কোনোভাবে অর্জুন প্রবীরকে পরাজিত করতে পারছিলেন না। কিন্তু শ্রীকৃষ্ণের ছলনায় প্রবীর মাতৃনাম করতে ভুলে গেলে সে শক্তিহীন হয়ে পড়ে এবং সেই সুযোগে ‘মূঢ়’ অর্থাৎ অর্জুন তাকে বধ করে। এই যুদ্ধকেই অন্যায় সমর বলা হয়েছে।
[৩২] ‘ভুলিব এ জ্বালা, এ বিষম জ্বালা’ – বক্তা কিভাবে জ্বালা ভুলতে চেয়েছেন ?
উ– এখানে বক্তা হলেন জনা।
তিনি স্বামি নীলধ্বজকে অনুরোধ করেছেন, তিনি যেন রণভূমিতে অর্জুনকে যথোচিত শিক্ষা দেন। যেভাবে অন্যায় সমরে প্রবীরকে অর্জুন নিধন করেছিলেন, সেইভাবে তাঁর স্বামী অর্জুনকে প্রতিদান ফিরিয়ে দেন। এইভাবে জনার প্রতিহিংসার আগুন নির্বাপিত হবে।
[৩৩] কুন্তীকে স্বৈরিণী বলার কারণ লেখ।
উ– কুন্তী হলেন পান্ডবদের জননী, ভোজরাজার কন্যা এবং বসুদেবের ভগ্নী।
মহর্ষি দুর্বাসাকে পরিচর্যায় তুষ্ট করে কুন্তি যে অমোঘ মন্ত্র শিখেছিলেন, সেই মন্ত্রের শক্তিতে একে একে একাশিক দেবতাকে স্বামীরূপে আহ্বান করেন। তাই তাকে স্বৈরিণী বলা হয়েছে।
[৩৪] ‘সত্যবতী সূত ব্যাস বিখ্যাত জগতে’ – প্রসঙ্গ উল্লেখ কর।
উ– পুত্রের হত্যাকারী অর্জুনের প্রতি স্বামীর আচরণ দেখে বিস্মিত হয়েছিল জনা। সেই প্রসঙ্গে বলা হয়েছে কটাক্ষ করেন সে ব্যাসের পিতা ব্রাহ্মণ হলেও জননী ছিলেন ধীবর কন্যা। অর্থাৎ তার পুত্র হয়ে জগতে বিখ্যাত হয়েছেন—এ নিয়ে জনার ব্যঙ্গ ফুটে উঠেছে এই উক্তির মধ্যে দিয়ে।