--------------------------------------------------
--------------------------------------------------


--------------------------------------------------
--------------------------------------------------

চিত্রকলা-চর্চায় শিল্পাচার্য নন্দলাল বসুর স্থান নিরূপণ করো। [২০১৮]

[উ] সূচনা—রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত শিশুপাঠ্য ‘সহজ পাঠ’ বইয়ের অলংকরণ যিনি করেছিলেন, তিনি হলেন নন্দলাল বসু (১৮৮২-১৯৬৬), অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সুযোগ্য ছাত্র। প্রথমে দ্বারভাঙায় ও পরে কলকাতার সেন্ট্রাল কলেজিয়েট স্কুলে নন্দলাল বসুর বিদ্যার্জন। শিশুকালে কুমোরদের দেখে মূর্তি গড়ে চিত্রকলায় তাঁর হাতেখড়ি। পরবর্তী সময়ে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও হ্যাভেল সাহেবের সহায়তায় আর্ট স্কুলে ভরতি হন।

চিত্রচর্চা ও কর্মজীবন—রবীন্দ্রনাথের আহ্বানে ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে নন্দলাল শান্তিনিকেতনের কলাভবনে যোগ দেওয়ার পর থেকেই এই প্রতিষ্ঠান শিল্পশিক্ষায় সমৃদ্ধ হয়ে ওঠে। ভারতীয় শিল্পশিক্ষায় নেচার স্টাডির সূচনা তাঁর হাত ধরেই। গুরু অবনীন্দ্রনাথের স্বচ্ছ জলরঙের ‘ওয়াশ’ পদ্ধতির পাশাপাশি ঘন জলরঙের টেম্পেরার কাজও তিনি শুরু করেন। তাঁর চিত্ররীতির নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যগুলি উল্লেখ করা যায়—

(১) ছবিতে নেচার স্টাডি বা আউটডোর স্টাডির উপর গুরুত্ব আরোপ। (২) ছবির বিষয় ছিল—শান্তিনিকেতনের বিস্তৃত মাঠ, মাঠে বিচরণরত মোষ, নারী-শিশু, মাল-বোঝাই গোরুর গাড়ি প্রভৃতি। (৩) মহাকাব্য ও ইতিহাসের বিষয়ও ছবিতে ধৃত হয়েছে।

উল্লেখযোগ্য চিত্র ও অবদান—শান্তিনিকেতনে যোগ দেওয়ার আগে তিনি ‘সিদ্ধিদাতা গণেশ’, ‘সিদ্ধার্থ’, ‘সতী’, ‘কৰ্ণ’ ইত্যাদি ছবি আঁকেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য কীর্তি ‘সহজপাঠের অলংকরণ’, ‘চলমান গান্ধিজি’ ইত্যাদি। ভারতীয় সংবিধানের অলংকরণ, ভারতরত্ন ও পদ্মশ্রী পুরস্কারের নকশা তাঁর অনবদ্য কীর্তি। তিনি ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে অজন্তা গুহাচিত্রের নকল করার উল্লেখযোগ্য কাজ করেন। ‘শিল্পচর্চা’ ও ‘রূপাবলী’ তাঁর দুটি উল্লেখযোগ্য শিল্পগ্রন্থ।

error: সর্বস্বত্ত্ব সংরক্ষিত