‘আনন্দমঠ’ গ্রন্থে কীভাবে জাতীয়তাবোধ ফুটে উঠেছে সে সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো।

[উ] ভারতীয়দের মধ্যে জাতীয়তাবোধ বিকাশে বিভিন্ন মনীষীদের লেখার অবদান উল্লেখযোগ্য। মনীষীদের এইসব লেখার মধ্যে সর্বপ্রথম উল্লেখযোগ্য হল—বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা দেশাত্মবোধক উপন্যাস ‘আনন্দমঠ’।

আনন্দমঠ উপন্যাসের রচনা ও প্রকাশ = ‘আনন্দমঠ’ উপন্যাসের রচয়িতা হলেন সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। ‘আনন্দমঠ’ প্রথম প্রকাশিত হয় ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দে।

আনন্দমঠ উপন্যাসের পটভূমি = ‘আনন্দমঠ’ উপন্যাসের পটভূমি হল অষ্টাদশ শতকের সন্ন্যাসী-ফকির বিদ্রোহ ও ছিয়াত্তরের মন্বস্তর।

আনন্দমঠের মূল বিষয় = ‘আনন্দমঠ’ উপন্যাসে দেশের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য একদল আত্মত্যাগী সন্ন্যাসীর কার্যাবলির বিবরণ আছে। এই উপন্যাসে সত্যানন্দের আহ্বানের মধ্যে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে ভারতীয়দের জাতীয়তাবোধ জাগানোর চেষ্টা করা হয়েছে। ‘আনন্দমঠ’ উপন্যাসে বঙ্কিমচন্দ্র পরাধীন দেশমাতার লাঞ্ছিত অপমানিত রূপ তুলে ধরেছেন। তিনি এই দেশমাতার উদ্ধারের জন্য একদল মাতৃভক্ত সন্তানের কথা বলে যুবসম্প্রদায়কে দেশপ্রেম ও সংগ্রামী জাতীয়তাবাদের আদর্শে উৎসাহী করতে চেয়েছেন।

বন্দেমাতরম্‌ = বন্দেমাতরম্ গান ও স্লোগানটি ‘আনন্দমঠ’ উপন্যাসে রয়েছে। ভারতীয়দের মধ্যে জাতীয়তাবাদের প্রসারে বন্দেমাতরম্-এর অবদান অপরিসীম। ভারতীয়দের মধ্যে জাতীয়তাবোধের বিকাশে বঙ্কিমচন্দ্রের ‘আনন্দমঠ’ ও তাঁর ‘বন্দেমাতরম্’ গানটির অবদান অপরিসীম। একারণে বঙ্কিমচন্দ্রকে ‘ভারতীয় জাতীয়তাবাদের প্রকৃত জনক’ বলে অভিহিত করা হয়।

error: সর্বস্বত্ত্ব সংরক্ষিত