কবি মুকুন্দরাম চক্রবর্তীর ‘অভয়ামঙ্গল’ চণ্ডীমঙ্গল কাব্যধারার অন্যতম কাব্য। এই কাব্যকে শুধু চণ্ডীমঙ্গল কাব্যধারায় শ্রেষ্ঠ কাব্য বলা হয় না বরং মধ্যযুগের যাবতীয় মঙ্গলকাব্যের ধারায় শ্রেষ্ঠত্বের আসন দেওয়া হয়। তাঁর কাব্যে সমকালীন সমাজজীবনের পরিচয় বিধৃত হয়েছে পরিপূর্ণভাবে। ব্যবহৃত হয়েছে বহু প্রবাদ, যা বর্তমান সময়েও ব্যবহৃত হতে দেখা যায়। নিম্নে এমন কিছু প্রবাদ ও বর্তমানে সেগুলি কিভাবে ব্যবহৃত হয় তা উল্লেখ করা হলো।
মুকুন্দরামের অভয়ামঙ্গলে উল্লিখিত প্রবাদ ও বর্তমানে সেগুলির রূপ
মুকুন্দরামের কাব্যে | একালে |
---|---|
দারিদ্র্যে ওনরাশি নাশে | দরিদ্রকে কেউ পোছে না |
হৃদয়ে পূরিত বিষ মুখে মকরন্দ | ভিতরে বিষ মুখে মধু |
জামাতা শ্বশুরে হইল ভুজঙ্গ-নকুল | অহি-নকুল সম্বন্ধ |
চিৎ হয়্যা শুতে নারে কুজের প্রকারে | কুঁজোরও ইচ্ছে করে চিৎ হয়ে শুতে |
উচিৎ কহিতে আমি সরকার অরি | উচিৎ কথা বললে খারাপ |
মাছিকে মারিতে কর এতবড় সাজ | মশা মারতে কামান দাগা |
ছেঁড়া ধুতি কোঁচা লম্ব | ঘরে না ভাত কোঁচা তিন হাত বা ঘরে না ভাত নাঙের উৎপাত |
প্রজা নাহি মানে বেটা আপনি মণ্ডল | গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়ল |
সুখেতে থাকিতে বিধি বিড়ম্বিলা দিয়া নিধি | সুখে থাকতে ভূতে কিলোয় |
যেই আপনার হয় সেই কভু ভিন্ন নয় | পর নয় আপন, আপন নয় পর বা পর কখনো আপন হয় না |
নিজ দোষে খাইলা আপনা | আপনার মাথা আপনি খায় |
যৌবন গরবে ভ্রমে নাহি পড়ে পা | গর্বে মাটিতে পা পড়ে না |
একজন সহিলে কোন্দল হয় দূর | এক হাতে তালি বাজে না |
কোপে কৈলে বিষপান আপনি ত্যজিবে প্রাণ সতিনের কিবা হবে হানি | চোরের উপর রাগ করে ভুঁয়ে ভাত খাওয়া |
পিপীড়ার পাখা ওঠে মরিবার তরে | পিঁপড়ের পাখা উড়ে মরার জন্যে |