[উ] জন গ্রিয়ারসন প্রথমে তথ্যচিত্র বা ‘Documentry’ শব্দটি ব্যবহার করেন ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দে। তথ্যচিত্রকে বলা হয় একটি অকল্পিত ছায়াছবি যা ঐতিহাসিকতাকে রক্ষণাবেক্ষণের উদ্দেশ্যে কোনো বিষয়কে তথ্যপূর্ণ হিসেবে পরিবেশন করে। তথ্যচিত্র এবং সাধারণ চলচ্চিত্রের মধ্যে তফাত রয়েছে। যেমন—তথ্যচিত্র বাস্তব্জীবনের প্রতিরূপ হলেও কাহিনিচিত্র তা নয়। তথ্যচিত্র বাস্তনির্ভর হলেও কাহিনিচিত্র আবেগনির্ভর।
বাংলা তথ্যচিত্র
বাংলা তথ্যচিত্রের ধারাকে অন্তর্নিহিত বিষয়ের নিরিখে দুটি শ্রেণিতে ভাগ করে আলোচনা করা যায়—বিষয়নির্ভর ও চরিত্রনির্ভর তথ্যচিত্র।
[] বাংলায় বিষয়নির্ভর তথ্যচিত্র নির্মাণের সূচনা করেন হীরালাল সেন। বলা যেতে পারে তিনিই বাংলা তথ্যচিত্রের পথ প্রদর্শক। ‘রানি ভিক্টোরিয়ার শবযাত্রা’, ‘দ্য বেঙ্গল পার্টিশন ফিল্ম’ ইত্যাদি তাঁর উল্লেখযোগ্য কীর্তি। তারপর অরোরা ফিল্মসের ‘পুলিশের লাঠিচালনা’, ‘রবীন্দ্রনাথের শেষযাত্রা’ বাংলার তথ্যচিত্র ধারাকে সমৃদ্ধ করে। পরবর্তীতে হরিসাধন দাশগুপ্তের ‘কোনারক’, ‘পুণ্যতীর্থ দক্ষিণেশ্বর’, ‘পৌষমেলা’, ‘বেঙ্গল টাইগারস’, কিংবা সত্যজিৎ রায়ের ‘সিকিম’, মৃণাল সেনের ‘ক্যালকাটা মাই এল ডোরাডো’—বাংলা বিষয়ভিত্তিক তথ্যচিত্রকে চিরন্তন করে তুলেছে।
[] বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে নির্মিত বাংলা জীবন বা চরিত্রনির্ভর তথ্যচিত্র ধারাটিও অত্যন্ত সমৃদ্ধ। হরিসাধন দাশগুপ্তের–‘আচার্য প্রফুল্লচন্দ্ৰ রায়’, ‘ওস্তাদ বড়ে গুলাম আলি খাঁ সাহেব’, ‘বাঘাযতীন’, ‘নন্দলাল’; পূর্ণেন্দু পত্রীর–‘অবনীন্দ্রনাথ’; সত্যজিৎ রায়ের–‘রবীন্দ্রনাথ’ বা ‘দ্য ইনার আই’ (বিনোদবিহারীকে নিয়ে), ‘বালা’ (বালাসরস্বতী), ‘সুকুমার রায়’, ঋত্বিক ঘটকের–‘ওস্তাদ আলাউদ্দিন খান’ ছাড়াও রামকিঙ্কর বেইজকে নিয়ে ‘আর্টিস্ট অব দ্য সোল’ ইত্যাদি অজস্র জীবনভিত্তিক তথ্যচিত্রে বাংলা তথ্যচিত্রের ধারা সমৃদ্ধ।