বাংলা সিনেমায় সত্যজিৎ রায়ের অবদান সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো। [২০১৫]

[উ] সূচনা

পড়াশোনা শেষে সত্যজিৎ রায় ‘ডি জে কিমার’ নামে একটি ব্রিটিশ বিজ্ঞাপনী সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হন। একাধারে প্রচ্ছদশিল্পী, ‘সন্দেশ’ পত্রিকার সম্পাদক ও সাহিত্যিক রূপে খ্যাতি অর্জন করলেও চলচ্চিত্রেই তাঁর সাম্রাজ্য নির্মাণ। ফরাসি পরিচালক জঁ রেনোয়ার চলচ্চিত্র দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল সত্যজিৎ রায়। তিনি মোট ৩৬টি পূর্ণদৈর্ঘ্য, স্বল্পদৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্র ও তথ্যচিত্র নির্মাণ করেন।

অবদান

সত্যজিতের সিনেমায় অবদানের প্রসঙ্গে যে সিনেমাটির কথা সর্বপ্রথমে উল্লিখিত হয় তা হলো, ১৯৫৫ আসলে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘পথের পাঁচালী’। বিভূতিভূষণের ‘পথের পাঁচালী’, ‘অপুর সংসার’, ‘অপরাজিত’ নিয়ে অপু-ত্রয়ী তৈরি করায় তিনি বিশ্ব চলচ্চিত্রের সেরা পরিচালকদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হন।

পরিচালিত চলচ্চিত্র

= সত্যজিৎ রায় পরিচালিত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হলো—‘জলসাঘর’, ‘মহানগর’, ‘আগন্তুক’, ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’, ‘শতরঞ্জ কী খিলাড়ি’, ‘নায়ক’ প্রভৃতি। ‘রবীন্দ্রনাথ’, ‘সিকিম’, ‘দ্য ইনার আই’ প্রভৃতি ৫টি তথ্যচিত্র নিমার্ণ করে সত্যজিৎ স্মরণীয় হয়ে আছেন। ছোটদের জন্য তিনি—‘হীরক রাজার দেশে’, ‘সোনার কেল্লা’, ‘গুপি গাইন বাঘা বাইন’ প্রভৃতি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। চলচ্চিত্রে তিনি ‘অস্কার’, ‘লিজিয়ন অফ অনার’-সহ বহু পুরস্কার পান।

‘পথের পাঁচালী’ চলচ্চিত্রটির গুরুত্ব

= বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপন্যাস অবলম্বনে সত্যজিৎ রায় একই নামে ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দে ‘পথের পাঁচালী’ ছবিটি তৈরি করেন। এই ছবিটি হয়ে ওঠে বাঙালি জীবনের আত্মকথা।

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অর্থানুকূল্যে আন্তর্জাতিক মানের প্রথম ভারতীয় চলচ্চিত্র নির্মিত হলো সত্যজিৎ রায়ের হাত ধরে। ‘কান চলচ্চিত্র উৎসবে’ সিনেমাটি Best Human Document বা ‘মানবতার শ্রেষ্ঠ দলিল’ রূপে বিবেচ্য হলো। এই সিনেমায় সুর দিয়েছিলেন পণ্ডিত রবিশঙ্কর। ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে ‘পথের পাঁচালী’ একটি মাইলফলক।

error: সর্বস্বত্ত্ব সংরক্ষিত