১২০+ প্রশ্ন উত্তরে বৈষ্ণব পদাবলি

১২০+ প্রশ্ন উত্তরে বৈষ্ণব পদাবলি

১২০+ প্রশ্ন উত্তরে বৈষ্ণব পদাবলি

বৈষ্ণব পদাবলি কী? বৈষ্ণব কবিদের নাম; বৈষ্ণব রসতত্ত্ব; বৈষ্ণব পদ সংকলন সবকিছুর উত্তর পেয়ে যান এই প্রশ্ন উত্তর সংকলনে। বাংলা সাহিত্যের মধ্য পর্বের উজ্জ্বল অধ্যায় হলো বৈষ্ণব সাহিত্য। এই পর্ব থেকে বাছাই প্রশ্নের উত্তর নিয়ে এই পোস্ট। 
প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে যে কোনো মন্তব্যকে স্বাগত জানাই। আমাদের টেলিগ্রাম ও ফেসবুক চ্যানেলে যুক্ত হোন। 
(ads1)

বৈষ্ণব পদাবলি থেকে প্রশ্ন উত্তর

(১) সর্বপ্রাচীন বৈষ্ণব পদ সংকলনের নাম কি? গ্রন্থটির সংকলক কে ছিলেন?

➤➤ ‘রাধাকৃষ্ণ রসকল্পবল্লী’ সংক্ষেপে ‘রসকল্পবল্লী, আনুমানিক সপ্তদশ শতকে  সংকলিত। সংকলক ছিলেন শ্রীখণ্ডের রামগোপাল দাস (ইনি গোপালদাস ভণিতায় বেশ কিছু বৈষ্ণব পদ লিখেছিলেন)।

[২] আচার্য বিশ্বনাথ চক্রবর্তীর বৈষ্ণব পদসংকলন গ্রন্থটির নাম কি ? 

➤➤ ‘ক্ষণদাগীত চিন্তামণি’ (সংক্ষেপে গীত চিন্তামণি)। অনুমাণিক ১৭০৪ খ্রি. বৃন্দাবনে এটি সংকলিত হয়। ৪৫ জন কবির তিন শতাধিক পদ সংকলিত হলেও চণ্ডীদাসের কোনো পদ এখানে স্থান পায়নি।

[৩] ‘গীত চন্দ্রোদয়’ পদসংকলনটি কে প্রকাশ করেন?

➥ বিশিষ্ট পদকর্তা ও গ্রন্থকার নরহরি চক্রবর্তী (এই গ্রন্থে ১৪৪৬টি পদ আছে)

[৪] রাধামোহন ঠাকুরের বৈষ্ণব পদসংকলন গ্রন্থটির নাম কি?

➥ ‘পদামৃত সমুদ্র’ (আনুমানিক ১৭৩০ খ্রি.)

[৫] ‘পদকল্পতরু’ বৈষ্ণব পদ সংকলন গ্রন্থটির প্রকৃত নাম কি? গ্রন্থটির সংকলক কে ? 

➥  ‘গীতকল্পতরু (গায়কদের মুখে ‘পদ কল্পতরু’ নামে রূপান্তরিত হয়েছে)। গ্রন্থটির  সংকলক হলেন গোকুলানন্দ সেন (এঁর ছন্দনাম বৈষ্ণব দাস)

[৬] ‘পদকল্পতরু’ গ্রন্থে কতজন পদকর্তার কতগুলি পদ স্থান পেয়েছে?

উঃ ১৩০ জন পদকর্তার চার হাজারেরও বেশি পদ স্থান পেয়েছে।

[৭] ড. সুকুমার সেন কোন্ গ্রন্থটিকে ‘বৈষ্ণব পদাবলীর ঋগ্বেদ সংহিতা’ আখ্যা দিয়েছিলেন?

উঃ পদকল্পতরু বা গীতকল্পতরু গ্রন্থটিকে।

[৮] গৌরসুন্দর দাসের পদসংকলন গ্রন্থটির নাম কি?

উঃ কীর্তনানন্দ বা সংকীর্তনানন্দ।

[৯] পদকর্তা দীনবন্ধুর পদসংকলন গ্রন্থের নাম কি?

উঃ সংকীর্তনামৃত (১৮ শতক)

[১০] ‘নায়িকার রত্নমালা’ পদসংকলটির সংকলকদ্বয়ের নাম কি কি?

উ: চন্দ্রশেখর ও শশিশেখর।

[১১] ‘রসকলিকা’ গ্রন্থের সংকলক কে?

উঃ নটবর দাস।

[১২] ‘পদরত্নাকর’ গ্রন্থের সংকলক কে?

উঃ কমলাকান্ত দাস।

[১৩]  রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সম্পাদিত বৈষ্ণব পদ সংকলন গ্রন্থটির নাম কি? কবির সহযোগী সম্পাদক কে ছিলেন ?

উঃ ‘পদরত্নাবলী’ (১২৯২ বঙ্গাব্দে)। কবির সহযোগী সম্পাদক ছিলেন শ্রীশচন্দ্র মজুমদার।

[১৪] হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায়ের সুবৃহৎ বৈব সংকলন গ্রন্থটির নাম কি? গ্রন্থের পদসংখ্যা কত ?

উঃ ‘বৈষ্ণব পদাবলী’ (১৩৬৮ বঙ্গাব্দ, ১৯৬১ খ্রীঃ)। ৩৭৫৬টি পদ আছে।

[১৫] পাঁচশত বৎসরের পদাবলী (১৯৬৮ বঙ্গাব্দ) গ্রন্থটির সম্পাদক কে?

উ: বিমান বিহারী মজুমদার।

[১৬] আদি বৈষ্ণব কবি কাকে বলা হয়?

উঃ ‘গীতগোবিন্দম্’-এর কবি জয়দেবকে (দ্বাদশ শতাব্দী)।

[১৭] ‘মৈথিল কোয়েল’ বা ‘মৈথিল কোকিল’ কাকে বলা হয় ?

উঃ মিথিলার বিশিষ্ট কবি বিদ্যাপতি ঠাকুরকে।

[১৮] বৈষ্ণব পদাবলী ছাড়া বিদ্যাপতি কি কি গ্রন্থ লিখেছিলেন ?

উঃ ‘কীর্তিলতা’ ‘কীর্তিপতাকা’, ‘ভূ-পরিক্রমা’, ‘দুর্গা ভক্তিতরঙ্গিনী’ এবং হর গৌরী বিষয়ক পদাবলী। 

১৯। বিদ্যাপতির আদি নিবাস কোথায় ?

উঃ বিহারের দ্বারভাঙ্গা জেলার মধুবনী পরগনার বিস্ফী গ্রামে। 

২০। বিদ্যাপতি কোন্ রানীর গুণমুগ্ধ ছিলেন ?

উঃ রানী লছমী দেবীর।

২১। ‘দ্বিতীয় বিদ্যাপতি কাকে বলা হয়?

উঃ চৈতন্য পরবর্তী যুগের কবি গোবিন্দদাসকে।

২২। ছোট বিদ্যাপতি কে?

উঃ বৈষ্ণব পদকর্তা কবিরঞ্জন।

২৩। বড়ু চণ্ডীদাসের নিবাস কোথায় ? ইনি কোন দেবীর উপাসক ছিলেন ? 

উঃ বাঁকুড়া জেলার ছাতনাগ্রামে। বাশুলী (বা বাসুলী) দেবীর উপাসক ছিলেন।

২৪। পদাবলীর চণ্ডীদাসের নিবাস কোথায়? এর সাধন সঙ্গিনীর নাম কি? 

উঃ বীরভূম জেলার নান্নুর গ্রামে। সাধন সঙ্গিনীর নাম (রজকিণী) রামী।

২৫। কোন্ কোন্ পর্যায়ের পদরচনায় চণ্ডীদাস শ্রেষ্ঠ?

উঃ পূর্বরাগ ও নিবেদন পর্যায়ের।

২৬। চৈতন্য পূর্ব যুগের দুজন বিশিষ্ট বৈষ্ণব পদকর্তার নাম লেখ ?

উঃ বিদ্যাপতি ও চণ্ডীদাস।

২৭। চৈতন্য পরবর্তী যুগের তিনজন বিশিষ্ট পদকর্তার নাম লেখ।

উঃ গোবিন্দদাস, জ্ঞানদাস, বলরাম দাস।

২৮। চৈতন্য সমসাময়িক কালের কয়েকজন পদকর্তার নাম লেখ। 

উঃ বাসুদেব ঘোষ, মাধব ঘোষ, গোবিন্দ ঘোষ, নরহরি সরকার, মুরারি গুপ্ত, রায় রামানন্দ, যদু নন্দন, 

শিবানন্দ সেন, শ্রীরূপ গোস্বামী, প্রমুখ।

২৯৷ কয়েক জন মুসলিম বৈষ্ণব পদকর্তার নাম লেখ। 

উঃ সৈয়দ মতুর্জা, চাঁদকাজী, নাসীর মামুদ, আলিরাজা প্রমুখ। 

৩০। ‘অভিনব জয়দেব’ কাকে বলা হয় ?

উঃ কবি বিদ্যাপতিকে।

৩১। ‘রসমঞ্জরী’ গ্রন্থের সংকলক কে?

উঃ পীতাম্বর দাস (রামগোপাল দাসের পুত্র) 

৩২। ‘সদুক্তিকর্ণামৃত’ গ্রন্থের সংকলক কে?

উঃ শ্রীধর দাস।

৩৩। খেতুরীর মহোৎসব কোথায় হয়েছিল ?

উঃ রাজশাহীর অন্তর্গত খেতুরী গ্রামে।

৩৪। প্রথম চৈতন্য বিষয়ক বাংলাপদ কে লেখেন?

উঃ মুরারি গুপ্ত।

৩৫। সনাতন গোস্বামীর কয়েকটি গ্রন্থের নাম লেখ ।

উঃ ‘বৃহৎ ভাগবতামৃত’, ‘হরি ভক্তিবিলাস’, ‘বৈষ্ণব তোষনী’ প্রভৃতি। 

৩৬। শ্রীরূপ গোস্বামীর কয়েকটি গ্রন্থের নাম লেখ।

উঃ ‘ভক্তি রসামৃত সিন্ধু’ ‘উজ্জ্বলনীলমনি’, ‘বিদগ্ধমাধব’, ‘ললিত মাধব’ (নাটক), ‘দানকোলি কৌমুদী’৷

৩৭। শ্রীজীব গোস্বামীর কয়েকটি গ্রন্থের নাম লেখ।

উঃ ‘রসামৃত শেষ’। ‘লোচনরোচনী’, ‘গোপালচম্পু’ (গদ্য) পদ্যময় কাব্য, ‘মাধব মহোৎসব’, গোপাল বিরুদাবনী।

৩৮। ‘হরিভক্তি বিলাস’ কার লেখা ?

উঃ গোপাল ভট্টের।

৩৯। বিষ্ণু উপাসনা বিষয়ক প্রাচীন গ্রন্থটির নাম কি?

উঃ ‘ঋকবেদ সংহিতা’।

৪০। ‘রাধা’ নামের প্রথম উল্লেখ কোথায় আছে?

উঃ হাল-এর ‘গাথাসপ্তশতী‘ গ্রন্থে।

৪১। গৌরাঙ্গকে নিয়ে প্রথম বাৎসল্যরসের পদ কে লেখেন ?

উঃ বাসুদেব ঘোষ।

৪২। বিদ্যাপতিকে ‘কবি সার্বভৌম’ উপাধি কে দেন?

উঃ রাজা শিব সিংহ।

৪৩। গৌরচন্দ্রিকা প্রথম কোথায় গাওয়া হয়েছিল ?

উঃ খেতুরীর মহোৎসবে।

88। শ্রী গৌরাঙ্গ কার কাছে কৃষ্ণমন্ত্রে দীক্ষা নেন?

উঃ ঈশ্বরপুরীর কাছে ৷

৪৫। মহাপ্রভু কার কাছে সন্ন্যাস দীক্ষা নেন?

উঃ কেশব ভারতীর কাছে। 

৪৬। কাদের ষড় গোস্বামী বলা হয় ?

উঃ শ্রীরূপ গোস্বামী, সনাতন গোস্বামী, শ্রীজীব গোস্বামী, রঘুনাথ ভট্ট, রঘুনাথ দাসও গোপাল ভট্টকে।

৪৭। চৈতন্যদেবের প্রথম শিষ্য কে? 

উঃ তপন মিশ্র (রঘুনাথ ভট্টের পিতা)

৪৮। নরহরি চক্রবর্তীর কয়েকটি গ্রন্থের নাম লেখ।

উঃ ‘ভক্তিরত্নাকার’, ‘নারোত্তম বিলাস’, ‘শ্রীনিবাস চরিত’।

৪৯। বিদ্যাপতি কার সভাকবি ছিলেন?

উঃ রাজা শিব সিংহের।

৫০। ‘গৌরাঙ্গ বিজয়’ কার লেখা।

উঃ চূড়ামণি দাসের।

৫১। “চৈতন্য চরিতের উপাদন গ্রন্থের লেখক কে?

উঃ বিমান বিহারী মজুমদার।

৫২। ‘মধ্যযুগের কবি ও কাব্য গ্রন্থের লেখক কে?

উঃ শঙ্করী প্রসাদ বসু।

৫৩। ‘রাজ সভার কবি ও কাব্য’ গ্রন্থের লেখক কে?

উঃ দেবনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ৷

৫৪। কে প্রমাণ করেন যে বিদ্যাপতি মিথিলার কবি?

উঃ জন বীমস্।

৫৫। ‘বিদ্যাপতির বিচার’ গ্রন্থটি কার লেখা?

উঃ সতীশচন্দ্র রায়ের।

৫৬। বিদ্যাপতির ‘পুরুষ পরীক্ষা’ গ্রন্থে কোন্ ভাষা ব্যবহৃত হয়েছে?

উঃ সংস্কৃত ভাষা।

৫৭। কোন গ্রন্থে খেতুরীর মহোৎসবের বর্ণনা আছে?

উঃ নরহরি চক্রবর্তীর ‘ভক্তি রত্নাকর’ গ্রন্থে। 

৫৮। গোবিন্দদাসকে ‘কবিরাজ’ উপাধি কে দিয়েছিলেন ?

উঃ শ্রীজীব গোস্বামী ।

৫৯। কোন্ রাজা বিদ্যাপতিকে বিস্ফী গ্রাম দান করেছিলেন ?

উঃ রাজা শিব সিংহ।

৬০। বিদ্যাপতির কোন গ্রন্থে রাজা শিব সিংহের প্রশস্তি আছে ?

উঃ ‘কীর্তিপতাকা’ গ্রন্থে।

৬১। বিদ্যাপতি কোন্ গ্রন্থে রাজা কীর্তি সিংহের প্রশস্তি রচনা করেছেন ?

উঃ ‘কীর্তিলতা’ গ্রন্থে।

৬২। বিদ্যাপতি কোন্ রাজবংশের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন ?

উঃ মিথিলার কামেশ্বর বংশের।

৬৩। বিদ্যাপতিকে ‘অভিনব জয়দেব’ উপাধি কে দিয়েছিলেন?

উঃ রাজা শিব সিংহ।

৬৪। বিদ্যাপতির গঙ্গা তীরবর্তী মহিমাজ্ঞাপক গ্রন্থটির নাম কি?

উঃ গঙ্গাবাক্যাবলী।

৬৫। বাংলাদেশে লীলাকীর্তনের ধারার প্রবর্তক কে?

উঃ মহাপ্রভু শ্রী চৈতন্যদেব।

৬৬। কার আহ্বানে কে খেতুরীর মহোৎসবের আয়োজন করেন?

উঃ জাহ্নবী দেবীর আহ্বানে নরোত্তম ঠাকুর এই মাহোৎসবের আয়োজন করেন। 

৬৭। চণ্ডীদাস সম্পর্কে সর্বপ্রথম কে বিস্তারিত আলোচনা করেন?

উঃ রামগতি ন্যায়রত্ন।

৬৮। গোবিন্দদাসের জন্ম কত খ্রীঃ ?

উঃ আনুমানিক ১৫৩৭ খ্রীঃ।

৬৯। গোবিন্দাদাস কার কাছে দীক্ষা নিয়েছিলেন ?

উঃ শ্রীনিবাস আচার্যের কাছে।

৭০। কোন্ কোন্ পর্যায়ের পদ রচনায় গোবিন্দদাস শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছেন ? 

উঃ ‘গৌরচন্দ্রিকা’, ‘অভিসার’, ‘মান’ ইত্যাদি।

৭১। জ্ঞানদাস কত খ্রীষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন?

উঃ আনুমানিক ১৫৩০ খ্রীঃ ।

৭২। জ্ঞানদাসের জন্মস্থান কোথায় ?

উঃ বর্ধমান জেলার কাঁদড়া গ্রামে।

৭৩। জ্ঞানদাস কার মন্ত্রশিষ্য ছিলেন ?

উঃ জাহ্নবীদেবীর।

৭৪। চণ্ডীদাস ‘রসপদ্মে অলি’ এ কথা কে বলেছিলেন?

উঃ জ্ঞানদাস।

৭৫। বলরাম দাস কত খ্রীঃ জন্মগ্রহণ করেন?

উঃ ষোড়শ শতকের প্রথমার্ধে।

৭৬। বলরাম দাস কার শিষ্য ছিলেন ?

উঃ নিত্যানন্দের।

৭৭। কোন পর্যায়ের পদ রচনায় বলরাম দাস অসাধারণ নৈপুণ্য দেখিয়েছিলেন ? 

উ: বাৎসল্য রসের পদ রচনায়।

৭৮। Cosmic Imagination-এর কবি কাকে বলা হয় ?

উঃ বিদ্যাপতিকে।

৭৯। কে প্রথম বিদ্যাপতির পদ সংকলন করেন ?

উঃ জগবন্ধু ভদ্র।

৮০। বিদ্যাপতি কোন্ কোন্ পর্যায়ের পদ রচনায় শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছেন? 

উঃ বয়ঃসন্ধি, মিলন, মাথুর, ভাবসম্মিলন, প্রার্থনা প্রভৃতি পর্যায়ের পদ রচনায়।

৮১। ‘চণ্ডীদাসচরিত’ গ্রন্থটির লেখক কে?

উঃ যোগেশচন্দ্র রায় বিদ্যানিধি।

৮২। পদাবলী শব্দটি কবির কোন্ গ্রন্থে দেখা যায় ?

উঃ জয়দেবের ‘গীতগোবিন্দম্’ গ্রন্থে।

৮৩। ভণিতা কাকে বলে?

উঃ প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় কবিরা কবিতার শেষে নিজেদের আত্ম পরিচয় দিতেন, আত্মপরিচয় জ্ঞাপক এই রীতিকে ভণিতা বলে।

৮৪। বৈষ্ণব পদাবলীর অনুসরণে ১৯ শতকে কোন্ কবি কি কাব্যগ্রন্থ লেখেন?

উঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লেখেন। ‘ভানুসিংহ ঠাকুরের পদাবলী’ (১৮৮৪) ।

৮৫। ‘ব্রজবুলি’ শব্দটি কে প্রথম ব্যবহার করেন?

উঃ ঈশ্বর গুপ্ত।

৮৬। বিদ্যাপতির কোন্ পর্যায়ের পদসমূহে গৌড়ীর বৈষ্ণব মতের বিরোধী ভাব তথা মুক্তির রসনা লক্ষ্য করা যায় ?

উঃ প্রার্থনা পর্যায়ের পদসমূহে।

৮৭। কোন ধরনের পদে বিদ্যাপতি আত্মবিশ্লেষণ করেছেন ? 

উঃ প্রার্থনা বিষয়ক পদে ৷

৮৮। বৈষ্ণবদের মতে ষড়ৈশ্বর্য কি?

উঃ প্রভুত্ব, পরাক্রম, যশ, সম্পদ, জ্ঞান ও বৈরাগ্য।

৮৯। ব্রজবুলি কি?

উঃ মৈথিল, বাংলা, অসমীয়া প্রভৃতি ভাষার সঙ্গে অবহটঠ ভাষার মিশ্রণে নির্মিত একটি কৃত্রিম কাব্যভাষা হল ব্রজবুলি।

৯০। বৈষ্ণব মতে রস কয় প্রকার ও কি কি? 

উঃ পাঁচ প্রকার, যথা- শান্ত, দাস্য, সখ্য, বাৎসল্য ও মধুর।

৯১। শৃঙ্গাররস কয় প্রকার ও কি কি ?

উ: দুই প্রকার,–১। বিপ্রলম্ভ শৃঙ্গার ২। সম্ভোগ শৃঙ্গার।

৯২। পূর্বরাগ কীভাবে উৎপন্ন হয় ?

উঃ দর্শন ও শ্রবণের মাধ্যমে।

৯৩। পূর্বরাগ কোন্ শৃঙ্গার রসের অর্ন্তগত?

উঃ বিপ্রলম্ভ শৃঙ্গার রসের অন্তর্গত।

৯৪। পূর্বরাগ কয় প্রকার ও কি কি ?

উঃ তিন প্রকার, সাধারণী, সমঞ্জসা ও সমর্থা ।

৯৫। মহাভাব বলতে কি বোঝ?

উঃ যে ভাব পূর্ণ, শ্রেষ্ঠ এবং রমনীয়; যে ভাব মনের ভাবকে রসময় করে হ্লাদিনীর সার নির্যাসে রূপান্তরিত করে দেয় তাকে মহাভাব বলে।

৯৬। বৈধী ভক্তি কাকে বলে?

উঃ শাস্ত্রের বিধি পালন জাত ভক্তিকে বৈধীভক্তি বলে।

৯৭। হৈতুকি ভক্তি কাকে বলে?

উঃ কোন হেতু বা কারণ অবলম্বনে যে ভক্তির জন্ম হয় তাকে হৈতুকি ভক্তি বলে। 

৯৮৷ অহৈতুকি ভক্তি কি ?

উঃ কোন কারণ ছাড়াই যে ভক্তির উদ্ভব হয়, যে ভক্তি স্বাভাবিক তাকে অহৈতুকি ভক্তি বলে।

৯৯। রাগাত্মিকা ভক্তি কাকে বলে?

উঃ অভীষ্ট বস্তুকে পাবার জন্য যে গভীর তৃষ্ণা, আবিষ্টতা, ভাব তন্ময়তা লক্ষ্য করা যায় তাকে রাগাত্মিকা ভক্তি বলে। 

১০০। রাগানুগা ভক্তি কি ?

উঃ ব্রজবাসীগণের ভাব-মাধুর্যের কথা শ্রবণ করে যারা ভক্তিরসে আপ্লুত হয়ে রাসত্মিকা ভক্তির অনুসরণ করেন তাঁদের অনুসৃত ভক্তিকে রাগানুগা ভক্তি বলে। 

১০১। সাধ্যসাধন তত্ত্ব কি?

উঃ শ্রীরাধা, কৃষ্ণের অংশবিশেষ, সুতরাং তাঁর কৃষ্ণপ্রেম স্বভাব সিদ্ধ। কিন্তু জীবের কৃষ্ণভক্তি সাধনা-সাপেক্ষ বলে এই তত্ত্বকে সাধ্য সাধন তত্ত্ব বলে। 

১০২। হ্লাদিনী শক্তি কি?

উঃ ঈশ্বর হলেন সচ্চিদানন্দ (অর্থাৎ সৎ, চিৎ ও আনন্দ)। আনন্দ থেকে ঈশ্বরের নিজ লীলা আস্বাদনের ইচ্ছা জন্মায়। এই ব্যাপারকেই হ্লাদিনী শক্তি বলে। শ্রীরাধা হ্লাদিনী শক্তির মূর্ত প্রকাশ।

১০৩। বৈষ্ণব পদাবলীর নান্দীপাঠ কোন পর্যায়কে বলা হয় ?

উঃ পূর্বরাগ পর্যায়কে।

১০৪। ‘বৈষ্ণব’ শব্দের উল্লেখ প্রথম কোথায় পাওয়া যায় ? 

উঃ মহাভারতের ‘শক্তিপদে’।

১০৫। কোন্ বৈষ্ণব কবিকে ‘পঞ্চোপাসক’ বলা হয় ? 

উঃ কবি সার্বভৌম বিদ্যাপতিকে।

১০৬। জ্ঞানদাস কোন্ বংশের সস্তান ?

উঃ ব্রাহ্মণ বংশের সস্তান।

১০৭। গোবিন্দদাস কোথায় জন্মগ্রহণ করে ?

উঃ কাটোয়ার সন্নিকটস্থ শ্রীখণ্ড গ্রামে (আনুমানিক ১৫৩৭ খ্রীঃ) 

১০৮। ‘সঙ্গীতমাধব’ গ্রন্থটি কোন্ বৈষ্ণব কবির লেখা ?

উঃ কবি গোবিন্দদাসের।

১০৯। বৈষ্ণবদের প্রধান দুটি ধর্মগ্রন্থের নাম লেখ।

উঃ ‘বিষ্ণুপুরাণ’ ও ‘ভগবতপুরাণ’।

১১০। ব্রজবুলি ভাষায় কে প্রথম পদরচনা করেন?

উঃ যশোরাজ খান।

১১১। “আজু হাম কি পেখলু নবদ্বীপচন্দ” – “পেখলু’ শব্দের ভাষাতাত্ত্বিক টীকা লেখ।

উঃ সংস্কৃত (প্রেক্ষা+লাম্‌=পেখলু (এটি ব্রজবুলি শব্দ) 

১১২। “রূপ লাগি আঁখি ঝুরে’– ‘ঝুরে’ শব্দটির ভাষাতাত্ত্বিক টীকা লেখ।

উঃ চূর্ণ>চুর>ঝুর>ধুরা>ঝুরা>ঝুরে।

১১৩৷ “জীবক জীবন হাম ঐছে জানি”–‘ঐছে’ কোন্ শব্দ থেকে এসেছে ? 

উঃ হিন্দি ‘ঐসে’ শব্দ থেকে।

১১৪। “এ নব যৌবন বিরহে গোঙায়ব” –‘গোঙায়ব’ শব্দটির ভাষাতাত্ত্বিক টীকা লেখ। 

উঃ হিন্দি ‘গোঙ্গা’>গুপ্তা>গোঙা+ইব = গোঙায়ব (ব্রজবুলি শব্দ)

১১৫। “লছমী চাহিতে দারিদ্র বেঢ়ল”– ‘লছমী’ শব্দের আদি উৎস কোন্ শব্দটি ? 

উঃ ‘লক্ষ্মী’ শব্দটি।

১১৬। বিপ্রলম্ভ শৃঙ্গারের কয়টি ভাগ ও কি কি ?

উঃ চারটি ভাগ,—১) পূর্বরাগ ২) মান ৩) প্রবাস ৪) প্রেমবৈচিত্র্য।

১১৭। বৈষ্ণব পদাবলীতে শ্রেষ্ট রস কোনটি ?

উঃ মধুর রস।

১১৮। ‘গৌরচন্দ্রিকা’ শব্দের আভিধানিক ‘অর্থ’ কি?

উঃ ‘ভূমিকা’

১১৯। গৌরাঙ্গ বিষয়ক পদবালী কাকে বলে?

উঃ মহাপ্রভু শ্রীগৌরাঙ্গকে কেন্দ্র করে ষোড়শ শতকে ও পরবর্তীকালে যে সব বৈষ্ণবপদ রচিত হয়েছে সেই সব পদাবলীকেই গৌরাঙ্গ বিষয়ক পদাবলী বলে।

১২০। পূর্বরাগের সংজ্ঞা দাও।

উঃ নায়ক-নায়িকার পারস্পরিক সঙ্গম বা মিলনের পূর্বে দর্শন, শ্রবণ প্রভৃতি থেকে জাত মিলনেচ্ছাময় রতি যখন সঞ্চারিভাব ও উপযুক্ত অনুভব দ্বারা পুষ্ট হয়ে প্রকাশিত হয় তখন তাকে পূর্বরাগ বলে।

১২১। পূর্বরাগের শ্রেণি বিভাগ কি।

উঃ দর্শন ও শ্রবণের ফলে পূর্বরাগ হয়। দর্শনজাত পূর্বরাগকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়—ক) চিত্রপটে দর্শন খ) স্বপ্নে দর্শন ৩) প্রত্যক্ষ দর্শন বা সাক্ষাৎ দর্শন। 

শ্রবণজাত পূর্বরাগের পাঁচটি ভাগ—ক) দূতি মুখে শ্রবণ খ) সখীমুখে শ্রবণ গ) ভাট মুখে শ্রবণ (বা বন্দী মুখে শ্রবণ) ঘ) বংশধ্বনি শ্রবণ ঙ) গায়ক কর্তৃক শ্রবণ ।

১২২। অনুরাগ কাকে বলে?

উঃ যে রাগ নিত্য নবায়মান হয়ে সদা প্রিয়জনকে অনুভব করায় এবং প্রতি মুহূর্তে নবীনতা দান করে তাকেই অনুরাগ বলে।

১২৩। অভিসার শব্দের অর্থ কি?

উঃ সংকেত স্থানের অভিমুখে অগ্রসর হওয়া। কিন্তু শব্দটি কালক্রমে প্রেমিক প্রেমিকার মিলনের উদ্দেশ্যে গমনকেই বোঝায়। 

১২৪। ‘মান’ কোন্ শৃঙ্গার এর অন্তর্গত।

উঃ বিপ্রলম্ভ

১২৫। ‘মান’ এর সংজ্ঞা দাও?

উঃ প্রেমিক-প্রেমিকা পরস্পরের প্রতি গভীর ভাব অনুরক্ত হওয়া সত্ত্বেও এবং নিকটে অবস্থান করা সত্ত্বেও যে বিশেষ মানসিক অবস্থা উভয়ের মিলনের পথে বাধাসৃষ্টি করে তাকেই মান বলে।

১২৬। মানের কটি সঞ্চারী ভাব ও কি কি?

উঃ নয়টি, যথা—১) নির্বেদ ২) শঙ্কা ৩) অসৰ্য (অসহন) ৪) চপলতা ৫) গর্ব ৬) অসূয়া ৭) অবহিথ (মনের ভাব গোপন) ৮) গ্লানি ৯) চিন্তা।

১২৭। ‘মান’ কে কয়ভাগে ভাগ করা হয় ? 

উঃ তিন ভাগে,—১) শ্ৰুত ২) অনুমিত ৩) দৃষ্ট

১২৮। ‘বৈচিত্র্য’ শব্দের অর্থ কি? 

উঃ বিচিত্রতা বা চিত্রের অন্যথাভাব।

১২৯। প্রেম বৈচিত্র্য্যের সংজ্ঞা দাও।

উ: প্রেমের উৎকর্ষ হেতু নায়ক-নায়িকা পরস্পরের সমীপবর্তী থেকেও বিরহ বিচ্ছেদ কাতরতায় যে আর্তি প্রকাশ করে তাকেই প্রেমবৈচিত্র্য্ বলে।

১৩০। ‘প্রবাস’ কাকে বলে?

উঃ পূর্বে মিলিত নায়ক-নায়িকার মধ্যে কেউ যদি দেশান্তর গমন করেন তখন তাকে বলে প্রবাস।

Go Home (info)



আমাদের টেলিগ্রাম ও ফেসবুক গ্রুপে যুক্ত হোন

👇👇👇👇

Join Telegram (demo)

Join Facebook (open)

error: সর্বস্বত্ত্ব সংরক্ষিত