“আমি তা পারি না।”—কবি কী পারেন না? “যা পারি কেবল”—কবি কী পারেন? [২০১৮]

[ক] কবিতা পরিচয়–‘ধানক্ষেত থেকে’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ‘ক্রন্দনরতা জননীর পাশে’ কবিতায় কবি মৃদুল দাশগুপ্তের সমাজসচেতনতার পরিচয় পাওয়া যায়। সমকালীন সমাজের অবক্ষয়ের চিত্র ফুটে উঠেছে এই কবিতায়।

[খ] প্রথম অংশ—কবি সমাজের চরম অবক্ষয়ের দিনে চুপ করে থাকতে পারেননি। ‘নিহত ভাইয়ের শবদেহ দেখে’ বিবেকবান কবি ক্রোধে গর্জে উঠতে চেয়েছেন। ‘যে মেয়ে নিখোঁজ, ছিন্নভিন্ন/জঙ্গলে তাকে পেয়ে’ কবি ভাগ্যের হাতে বিচারের ভার দিতে চাননি।

[গ] দ্বিতীয় অংশ—কবি জানেন তাঁর কলম জন্ম দিতে পারে বিদ্রোহের। দেশবাসীর কাছে রাজনীতি যখন পরিণত হয়েছিল রণনীতিতে, শাসকদলের রক্তচক্ষুর আস্ফালনে আপামর জনগণ নীরব হয়ে গেলে, কবি তাঁর প্রতিবাদী সত্তায় জাগ্রত হন। তিনি সমাজের বিপদের সময়ে জন্মভূমির পাশে দাঁড়ান। তাই আলোচ্য কবিতার মাধ্যমে কবি বৃহত্তর আন্দোলনের সূচনা করতে চেয়েছেন।

 বিবেক, মূল্যবোধের তাড়নায় কবি কবিতার মধ্যে শব্দের শক্তি দিয়ে মানুষের মনে বিস্ফোরণ ঘটাতে চেয়েছেন—

“আমার বিবেক, আমার বারুদ

বিস্ফোরণের আগে।”

কবির বিবেক কবিকে জন্মভূমির প্রতি দায়বদ্ধ থাকতে, মানুষের পাশে দাঁড়াতে বাধ্য করে। আর এই অঙ্গীকারের মধ্য দিয়ে কবির প্রতিবাদী সত্তাটি স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

error: সর্বস্বত্ত্ব সংরক্ষিত