ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতে শাসন প্রতিষ্ঠার সূচনায় রাজ্যবিস্তার ও শাসনতান্ত্রিক কাঠামো নির্মাণে বেশি মনোযোগী হয়েছিল। তাই শিক্ষাক্ষেত্রে তাদের দৃষ্টি পড়েছিল বিলম্বে। ভারতে সরকারিভাবে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রবর্তিত হয় বড়োলাট লর্ড বেন্টিঙ্কের আমলে ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে।
ভারতে সরকারি প্রচেষ্টায় পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রবর্তনের পূর্বে বেসরকারি উদ্যোগে পাশ্চাত্য শিক্ষার ভিত্তি রচিত হয়। এর দুটি ধারা ছিল—
খ্রিস্টান মিশনারিদের প্রচেষ্টা: খ্রিস্টান মিশনারিগণ পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ব্যাপটিস্ট মিশনারি উইলিয়ম কেরি, মার্শম্যান ও উইলিয়ম ওয়ার্ড (শ্রীরামপুর ত্রয়ী) ১৮১৮ খ্রিস্টাব্দে শ্রীরামপুর কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন।
বিশপ মিডলটন শিবপুরে ‘বিশপ কলেজ’ প্রতিষ্ঠা করেন। স্কটিশ মিশনারি আলেকজান্ডার ডাফ ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে • কলকাতায় প্রতিষ্ঠা করেন ‘জেনারেল অ্যাসেম্বলিজ ইনস্টিটিউশন’, যা বর্তমানে স্কটিশ চার্চ কলেজ নামে পরিচিত।
প্রগতিশীল ভারতীয় ও বিদেশিদের প্রচেষ্টা: প্রগতিশীল ভারতীয় ও বিদেশিরা পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে রাজা রামমোহন রায় প্রতিষ্ঠা করেন ‘অ্যাংলো-হিন্দু স্কুল’।
১৮১৭ খ্রিস্টাব্দে ডেভিড হেয়ার প্রমুখের প্রচেষ্টায় কলকাতায় ‘হিন্দু কলেজ’ প্রতিষ্ঠিত হয়, বর্তমানে যেটি ‘প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়’ নামে পরিচিত।
ইংরেজি ভাষায় ভালো পাঠ্যবই রচনার জন্য ডেভিড হেয়ার ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠা করেন ‘ক্যালকাটা স্কুল বুক সোসাইটি” এবং ইংরেজি বিদ্যালয় স্থাপনের উদ্দেশ্যে ১৮১৮ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠা করেন ‘ক্যালকাটা স্কুল সোসাইটি’।