ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রবর্তনের প্রভাব কী ছিল?

অথবা, উনিশ শতকে পাশ্চাত্য শিক্ষাবিস্তারের প্রভাব কী ছিল?

ভূমিকা: উনিশ শতকে ভারতে খ্রিস্টান মিশনারি ও দেশীয় ব্যক্তিদের এবং সরকারি উদ্যোগে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসার ঘটেছিল। এইরূপ পাশ্চাত্য শিক্ষাবিস্তারের সুপ্রভাব ও কুপ্রভাব দুই-ই ছিল।

সুপ্রভাব: (i) পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারের ফলে আধুনিক জ্ঞান, বিজ্ঞানচর্চার পথ উন্মুক্ত হয়ে পড়ে। ফলে প্রচলিত অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কার-এর প্রভাব এ যুগে ক্রমশ কমে আসতে থাকে।       (ii) উনবিংশ শতকে পাশ্চাত্য সাহিত্য, দর্শন, শিল্প প্রভৃতির চর্চার ফলে ভারতীয়দের মধ্যে গণতন্ত্র ও মানবতাবাদের ধারণার উদ্ভব ঘটে।  (iii) ইংরেজি শিক্ষার মাধ্যমে ভারতবর্ষের শিক্ষিত সমাজ ইউরোপীয় রাজনীতি, সাহিত্য, দর্শন, অর্থনীতির সংস্পর্শে এসে জাতীয়তাবাদী চেতনার উন্মেষ ঘটে এবং ব্রিটিশ বিরোধী মনোভাবে জাগরিত হয়।

কুপ্রভাব: ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষাবিস্তারের মধ্যে ছিল—(i) ভারতীয় ভাষা ও সংস্কৃতির অবহেলা (i) বৈজ্ঞানিক ও কারিগরি শিক্ষার অবহেলা (i) অবহেলিত নারীশিক্ষা ও গণশিক্ষা প্রভৃতি।

উপসংহার: নানারূপ দুর্বলতা সত্ত্বেও পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসার ভারতে এক নবযুগের সূচনা করে। সমাজের অন্ধবিশ্বাস, কুসংস্কার ও ঘৃণ্য মূল্যবােধকে দূর করার জন্য ঊনবিংশ শতাব্দীতে বহু সমাজ ও ধর্মসংস্কার আন্দোলন শুরু হয় এবং পরবর্তী সময়ে এই আন্দোলন ব্রিটিশ বিরোধী জাতীয় সংগ্রামের পটভূমি তৈরি করে দেয়।

error: সর্বস্বত্ত্ব সংরক্ষিত