নীলচাষিদের অত্যাচারের প্রতি এবং নীলবিদ্রোহে শিক্ষিত সমাজের সমর্থন কতখানি ছিল তা লেখ।

[] নীলচাষিদের ওপর নীলকরদের অবর্ণনীয় নির্যাতনের প্রতিকারের উদ্দেশ্যে দেশের শিক্ষিত সমাজ এগিয়ে আসে।

[ক] পত্রিকা ও সম্পাদক= নীলকরদের অত্যাচারের কথা সর্বপ্রথম ‘সমাচার চন্দ্রিকা’ ও ‘সমাচার দর্পণ” পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। ১৮৪৯ খ্রিস্টাব্দে অক্ষয়কুমার দত্ত ‘তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা’-য় সর্বপ্রথম এ সম্পর্কে বিশদ আলোচনা করেন।

পরবর্তীকালে ‘হিন্দু প্যাট্রিয়ট’ পত্রিকার সম্পাদক হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়, গিরিশচন্দ্র ঘোষ, মনোমোহন ঘোষ, শিশিরকুমার ঘোষ, দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ প্রমুখ নীলচাষিদের নানাভাবে সাহায্য করেন ও নীল আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন।

হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় তাঁর ‘হিন্দু প্যাট্রিয়ট’ পত্রিকায় নীলকরদের শোষণ ও অত্যাচারের কাহিনী নিয়মিতভাবে প্রকাশ করে নীলবিদ্রোহীদের পক্ষে জনমত গঠন করেন। তাঁর প্রচেষ্টায়  শিক্ষিত মধ্যবিত্ত সম্প্রদায়ের ইংরেজ মোহভঙ্গ ঘটে, তারা কৃষকদের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়।

[খ] গ্রন্থ= ১৮৬০ খ্রিস্টাব্দে দীনবন্ধু মিত্রের বিখ্যাত ‘নীলদর্পণ’ নাটক প্রকাশিত হয়। নীলকরদের অকথ্য অত্যাচারে সোনার বাংলা কীভাবে শ্মশানে পরিণত হয়েছে তার কথা রয়েছে এই নাটকে। রেভারেন্ড জেমস্ লঙ-এর উদ্যোগে এই নাটকটির ইংরাজি অনুবাদ করেন মধুসূদন দত্ত। এই কারণে জেমস সাহেবের কারাদণ্ড ও জরিমানা হয়েছিল। তখন কালীপ্রসন্ন সিংহ সেই জরিমানার টাকা দিয়েছিলেন। অর্থাৎ শিক্ষিত সহানুভূতিশীল বাঙালি ছাড়াও বিদেশীরাও এই বিদ্রোহে সমর্থন জানিয়েছিল।

error: সর্বস্বত্ত্ব সংরক্ষিত