শ্রীকৃষ্ণমাচার্য ‘বাসন্তিকস্বপ্নম্’ নাট্যাংশের মধ্য দিয়ে পাঠকদের কী কী বার্তা দিতে চেয়েছেন?  [2016]

[] শ্রীকৃষ্ণমাচার্য ‘বাসন্তিকস্বপ্নম্’ নাট্যাংশের মাধ্যমে পাঠকদের কাছে সময়োপযোগী ধ্যান-ধারণা তুলে ধরতে সচেষ্ট হয়েছেন। পাঠ্য নাট্যাংশে যে যে বিষয় উঠে এসেছে তা আলোচিত হলো।

(১) দেশাচার : রাজার কর্তব্য দেশকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা। তার জন্য কিছু দেশাচার সকলকে মানতে হয়। তা না হলে দেশে অনাচার সৃষ্টি হবে। আলোচ্য নাট্যাংশে রাজা ইন্দ্রবর্মা নিজেই একজন প্রেমিক। প্রেমিক হয়ে কৌমুদীর মতো অল্পবয়সি সুন্দরীর প্রেমকে অস্বীকার করতে পারেন না। আবার দেশাচার অনুসারে গুরুজন তথা পিতার আদেশ মান্য করা উচিত। এই দুয়ের দ্বন্দ্বে রাজা দিশেহারা। তাই তিনি প্রথমে বালিকা কৌমুদীকে ‘বালিকা’ সম্বোধনে মকরন্দের প্রশংসা করে তার প্রতি আকৃষ্ট করতে সচেষ্ট হন। তর্কে বুদ্ধিমতী কৌমুদীর কাছে হেরে, রাজদণ্ডের ভয় দেখিয়ে ইন্দুশর্মাকে খুশি করার চেষ্টা করেন।

(২) সমব্যথীভাব : প্রকৃত রাজা হলেন দেশের পিতা। প্রজারা হল তাঁর সন্তানের মতো। রাজার উচিত প্রজাদের সুখ ও দুঃখে অংশীদার হওয়া। এই গুণাবলি বৃদ্ধ ইন্দুশর্মার প্রতি রজত আচরণ, অবন্তী নগরে যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে আনন্দের প্রচার, সংগীতশালায় সকলের অংশগ্রহণের মধ্যে নাট্যকার দেখাতে চেয়েছেন।

(৩) শিষ্টাচার : মানুষের মহত্ত্বের পরিচয় পাওয়া যায় তার ব্যবহারের মাধ্যমে, যেমন-– গুরুজনদের প্রতি শ্রদ্ধা, ছোটোদের স্নেহ করা, দুঃখী ব্যক্তির প্রতি সহানুভূতিশীলতা, গুরুজনদের আদেশ মান্য করা, সকলকে তার গুণ অনুসারে মর্যাদা দেওয়া প্রভৃতি। নাট্যকার ‘বাসন্তিকস্বপ্নম্’ নাট্যাংশে এই শিষ্টাচার দেখিয়েছেন।

(৪) সময়োপযোগী ভাবনা : নাট্যকার যেমন শিষ্টাচার, দেশাচারকে গুরুত্ব দিয়েছেন, তেমনই তরুণ-তরুণীর ভাবনাকে গুরুত্ব দিয়ে কৌমুদীর মুখে প্রতিবাদী ভাবনা দিয়েছেন।

error: সর্বস্বত্ত্ব সংরক্ষিত