রাজা ইন্দ্রবর্মা ও কৌমুদীর কথোপকথন বা যুক্তিতর্কের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও। [২০১৫, ২০১৯]

[] শ্রীকৃষ্ণমাচার্য রচিত ‘বাসন্তিকস্বপ্নম্’ নামক নাট্যাংশে রাজা ইন্দ্রবর্মা ও কৌমুদীর দীর্ঘ কথোপকথন রয়েছে। ইন্দুশর্মার অনুরোধে বিরোধ মেটাতে পরস্পরের মধ্যে কথোপকথন যুক্তিতর্কের জায়গায় পৌঁছোয়। ইন্দ্রবর্মা ও কৌমুদীর কথাবার্তার মধ্যে দিয়ে দুজনের চরিত্রের বিভিন্ন দিক উঠে আসে বলে, এই কথোপথন অংশ খুব গুরুত্বপূর্ণ।

(১) রাজা ইন্দ্রবর্মা প্রথমে কৌমুদীকে ‘বালিকা’ বলে স্নেহযুক্ত সম্বোধন করে বলেন যে, পিতার ইচ্ছার বিরোধিতা করা কৌমুদীর উচিত হয়নি। কৌমুদীর পতি/বর মকরন্দ যাকে তার পিতা পছন্দ করেছে সে যেমন তরুণ তেমনই রমণীয়। কৌমুদী তখন রাজাকে ভয় না পেয়ে অতি সাহসের সঙ্গে বলে যে, তার পছন্দের প্রার্থী বসন্তও মকরন্দের মতো বয়সে তরুণ ও রমণীয়।

(২) রাজার দ্বিতীয় বক্তব্য ছিল– বসন্ত প্রিয়দর্শন হলেও পিতার মতানুযায়ী বলা যায়, মকরন্দ বসন্তের চেয়ে অপেক্ষাকৃত প্রিয় হওয়া উচিত। রাজার কথার উত্তরে কৌমুদী বলে যে– তার পিতা ইন্দুশর্মা যদি কৌমুদীর চোখ দিয়ে দেখতেন তবে বসন্তকেই শ্রেষ্ঠ বলে মনে করতেন।

(৩) রাজা পরেও কৌমুদীকে পিতার পছন্দের পাত্রকে বিবেচনা করতে বললে কৌমুদী রাজার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়ে বলে যে তার সিদ্ধান্ত ভুল হলেও কিছু করার নেই– “বিস্মৃতং চ ময়া কিং কৰ্তব্যম্।”

তখন রাজা কৌমুদীকে ‘ভদ্রে’ বলে সম্বোধন করে তার প্রশংসা করে বলেন, কৌমুদী দেখতে সুন্দর, বয়সও অল্প। যদি পিতার আদেশ না মানে তবে দেশাচার লঙ্ঘনের দায়ে মৃত্যু অনিবার্য অথবা যাবজ্জীবন বিবাহ না-করে থাকতে হবে। কৌমুদীর দৃঢ়সংকল্প করে যে, বসন্তের জন্য সে রাজার যেকোনো শাস্তি মাথা পেতে নেবে। তবে বসন্তের স্থানে অন্য কাউকে বসাতে পারবে না।

(৪) পরিশেষে রাজা ইন্দ্রবর্মা কৌমুদীকে সতর্ক করে বলে—পিতার আদেশ তার মেনে নেওয়া উচিত নয়তো তাকে মৃত্যুবরণ করতে হবে।

error: সর্বস্বত্ত্ব সংরক্ষিত