[] বিশিষ্ট কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের ‘আমি দেখি’ মূলত বাস্তব জীবন থেকে নেওয়া এক অনন্য অনুভবের কবিতা। পরিবেশের শ্রেষ্ঠ সম্পদ যে গাছ, তাকে কেন্দ্র করেই কবিতার মূলভাব ব্যক্ত হয়েছে।
[] বিংশ শতকের নাগরিক জীবনের গতিময়তাকে কবি প্রত্যক্ষ করেছেন। যন্ত্রসভ্যতার আবেগহীনতার প্রেক্ষাপটে ক্লান্ত কবি রচনা করেছেন এই কবিতাটি।
শহরবাসী কবির চিরকালীন আকর্ষণ অরণ্য-প্রকৃতির প্রতি। কিন্তু ক্রমাগত সবুজ ধ্বংস হয়ে কংক্রিটের শহর বর্তমানে ব্যধির শিকার। যন্ত্রসভ্যতার বিকাশ একের পর এক গাছ, একের পর এক অরণ্য যেন হাঁ করে গিলে নিচ্ছে। সমগ্র শহর জুড়ে যেন চলছে অরণ্য-নিধন যজ্ঞ।
বহুদিন শহরবাসে কবির উপলব্ধি হয়েছে সভ্যতার অপরিকল্পিত এই বিকাশ সভ্যতারই বিনাশের কারণ হয়ে উঠছে। অরণ্য ধ্বংস দেখে কবি ক্লান্ত। তিনি পুনরায় প্রকৃতির মায়ের কোলে ফিরে যেতে চান। কবির আবেদন—
‘গাছগুলো তুলে আনো, বাগানে বসাও
আমার দরকার শুধু গাছ দেখা
গাছ দেখে যাওয়া
গাছের সবুজটুকু শরীরে দরকার
আরোগ্যের জন্যে ওই সবুজের ভীষণ দরকার’।
কবি জানেন, এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি ঘটবে সবুজায়নের মধ্যে দিয়ে। তিনি তাই বলেছেন, গাছ লাগাতে। নাগরিক জীবনকে তিনি আশ্রয় নিতে বলেছেন অরণ্যের কাছে।। কারণ এভাবেই আরোগ্যলাভ সম্ভব।
কবির প্রত্যাশা শহরের বাগান একদিন সবুজ হবে। গড়ে তুলতে হবে সবুজ জঙ্গল। প্রকৃতির মুক্তাঞ্চলেই মানুষের মুক্তি ঘটবে–সবুজের পিয়াসী কবি পাঠকের দরবারে এই বার্তাই বয়ে নিয়ে এসেছেন।