[] প্রথম অংশ = উত্তর বাংলা আধুনিক কবিতার বিশিষ্ট কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘অঙ্গুরী তোর হিরণ্য জল’ কাব্যের ‘আমি দেখি’ কবিতা থেকে উদ্ধৃতাংশটি গৃহীত। ‘ওই সবুজ’ বলতে মুক্ত প্রকৃতির বুকে ছড়িয়ে থাকা গাছপালার সবুজের কথা বলা হয়েছে।
[] দ্বিতীয় অংশ = কবি জানেন যে, মানুষের সঙ্গে অরণ্যের এক সুগভীর যোগ আছে। কবি অনেকদিন নগরসভ্যতায় বাস করেছেন। শহুরে প্রাণহীনতা, ব্যস্ততা, ক্লান্তি কবিকে কষ্ট দেয়। ইট-কাঠ-পাথর আর কংক্রীটের এই নাগরিক সভ্যতা ক্রমশ গ্রাস করে চলেছে সবুজ অরণ্যপ্রাণকে। নির্বিচারে বৃক্ষনিধন করে নগর তার সমাধির কবর খুঁড়ে চলেছে। কবি বলেছেন—
‘শহরের অসুখ হাঁ করে কেবল সবুজ খায়
সবুজের অনটন ঘটে…’
যান্ত্রিক এই সভ্যতায় নির্বিচারে ‘বন কেটে বসত’ নির্মাণ মানুষকে ভয়ানক এক সমস্যার মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। নগরসভ্যতার আগ্রাসনে সবুজের অনটন কবিকে ব্যথিত করেছে। এই কারণে কবি বাঁচার জন্য, আরোগ্যের জন্য, পরিবেশের কোমলতাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য গাছ তুলে এনে বাগানে বসানোর নির্দেশ দিয়েছেন—
‘তাই বলি, গাছ তুলে আনো
বাগানে বসাও আমি দেখি’
কবির চোখ চায় সবুজ আর মন চায় সবুজ বাগানের সমারোহ। শহরের ব্যস্ততা, নেতিবোধ, জীবনের প্রতি বিরূপতা থেকে আরোগ্যের জন্য কেবলমাত্র সবুজের সান্নিধ্য দরকার। তিনি জানেন মনের মুক্তিতে গাছের সবুজ একমাত্র ঔষধি।