ঔপনিবেশিক শাসন প্রতিষ্ঠার ফলাফল আলোচনা কর। ৪

[] এশিয়া মহাদেশ, নতুন বিশ্ব অর্থাৎ আমেরিকা ও পৃথিবীর অন্যান্য অঞ্চলে ইউরোপীয়দের ঔপনিবেশিক শাসন প্রতিষ্ঠার ফলাফল ও তাৎপর্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

১. সামুদ্রিক বাণিজ্য বৃদ্ধি : ইউরোপীয়দের ঔপনিবেশিক শাসন প্রতিষ্ঠিত হলে ইউরোপের সঙ্গে আমেরিকার সামুদ্রিক বাণিজ্যের সূত্রপাত ঘটে। ফলে ইউরোপের বাণিজ্য আরও সমৃদ্ধ হয়।

২. শোষণ : বিভিন্ন প্রান্তের উপনিবেশগুলিতে সীমাহীন শোষণ শুরু হয়। নানারকম অর্থনৈতিক শোষণ চালানো হয়। এই শোষণের মাধ্যমে ইউরোপ সমৃদ্ধ হয়ে ওঠে।

৩. দারিদ্র্য বৃদ্ধি : মুদ্রাস্ফীতি ও দ্রব্যমূল্যবৃদ্ধির ফলে ইউরোপের দরিদ্র মানুষের অবস্থা দুর্বিষহ হয়ে ওঠে।  খাদ্যদ্রব্যের দাম সাধারণ দরিদ্র মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যায়। খাদ্যদ্রব্যের মূল্য যথেষ্ট বাড়লেও সেই তুলনায় মজুর ও শ্রমিকদের মজুরি বাড়েনি।

৪. পুঁজিপতি শ্রেণির উত্থান : বিভিন্ন উপনিবেশ থেকে সম্পদ আমদানির ফলে ইউরোপের একশ্রেণির বণিকদের হাতে বিপুল পরিমাণ অর্থসম্পদ জমা হয়। এভাবে পুঁজিপতি বা ক্যাপিটালিস্ট (Capitalist) শ্রেণির উদ্ভব ঘটে।

৫. শিল্পে অগ্রগতি : মূলধনের জোগান, উপনিবেশ থেকে কাঁচামাল আমদানি, উপনিবেশে পণ্য বিক্রির বাজারের প্রসার  প্রভৃতির ফলে ইউরোপে শিল্পোৎপাদন ক্রমে বাড়তে থাকে। ইংল্যান্ডে শিল্পোৎপাদনের ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটে যায়। সর্বাধিক অগ্রগতি লক্ষ করা যায় বস্ত্রশিল্পে।           এশিয়া, আফ্রিকা ও আমেরিকায় ইউরোপীয়দের বিভিন্ন উপনিবেশ গড়ে উঠলে এইসব অঞ্চলে তাদের অর্থনীতির প্রসার ঘটে। এভাবে সপ্তদশ শতকে ইউরোপে বিশ্ব অর্থনীতির উদ্ভব ঘটে। এককথায় ঔপনিবেশিক শাসন প্রতিষ্ঠার ফলাফল সুদূরপ্রসারী ছিল।

error: সর্বস্বত্ত্ব সংরক্ষিত